food

অভুক্তদের দেওয়া হল খাবার

শুধু পুলিশ নয়, জটিল পরিস্থিতিতে অসহায় সহ-নাগরিকের পাশে দাঁড়ানোর কথা ভাবছেন বিভিন শ্রেণির মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ০৭:৩২
Share:

সহানুভূতি: হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের উদ্যোগে তারকেশ্বর স্টেশন এলাকার ভবঘুরেদের খাবার দেওয়া হল। ছবি: দীপঙ্কর দে

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, করোনাজনিত পরিস্থিতিতে কেউ যেন অভুক্ত না থাকেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন বস্তিতে এবং প্রান্তিক মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচি নিলেন চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর। কর্মসূচির পোশাকি নাম ‘নো এম্পটি স্টম্যাক’। অর্থাৎ, খালি পেটে থাকা নয়। কমিশনারের তরফে সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অর্থ বা খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সাহায্যের অনুরোধ জানানো হযেছে। পুলিশই গরিব মানুষের কাছে ওই সাহায্য পৌঁছে দেবে। পুলিশ কমিশনার এবং তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতা দু’লক্ষ টাকা করে দিয়ে প্রাথমিক ভাবে চার লক্ষ টাকার একটি তহবিল তৈরি করেছেন।

Advertisement

পুলিশ কমিশনার জানান, সংগৃহীত টাকা দিয়ে চাল, ডাল-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র কিনে প্যাকেট করে তা মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে। প্রতি দিনের রোজগারের উপর নির্ভরশীল অনেক মানুষেরই এখন কাজ বন্ধ। তাঁরা সমস্যায় আছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই এই প্রচেষ্টা।

শুধু পুলিশ নয়, জটিল পরিস্থিতিতে অসহায় সহ-নাগরিকের পাশে দাঁড়ানোর কথা ভাবছেন বিভিন শ্রেণির মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে জাঙ্গিপাড়া ব্লকে এগিয়ে এসেছেন প্রাথমিক শিক্ষকেরা।

Advertisement

জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তমাল চন্দ বলেন, ‘‘আমাদের এলাকার প্রাথমিক শিক্ষকেরা মাথাপিছু এক হাজার টাকা করে দিয়েছেন। আপাতত ৫০ হাজার টাকা মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ তহবিলে আমরা তুলে দেব।’’

ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েতে হুগলির প্রায় সাড়ে চার হাজার পদাধিকারী এবং জনপ্রতিনিধিকে করোনা-সংক্রান্ত মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে অর্থ দান করার আবেদন জানালেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব। তিনি জানান, পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা সাম্মানিক পান। সেই সরকারি অর্থই দান করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে টাকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘প্রবীণ নাগরিক সহায়তা কেন্দ্র’, ‘সবুজের অভিযান’, ‘নারী ক্ষমতায়ণ ও শিশু রক্ষা মঞ্চ’ এবং ‘আইন সহায়তা কেন্দ্র’ নামে চন্দননগরের চারটি সংগঠন। ওই সব সংগঠনের তরফে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে সাহায্য ছাড়াও আমরা ঠিক করেছি, চাঁদা দিয়ে অন্তত ৫০০ সাবান কিনে চন্দননগরের পুর কমিশনারকে দেব। তাঁকে অনুরোধ করব, সেই সব সাবান যেন শহরের বস্তি এলাকায় বিলি করা হয়।’’

বৈদ্যবাটী স্টেশনই ঘরবাড়ি প্রায় ২০ জন ভবঘুরের। গত মঙ্গল‌বার থেকে তাঁদের দুপুর ও রাতের খাবারের বন্দোবস্ত করছেন স্থানীয় কয়েক জন যুবক-যুবতী। বুধবার খাবারের তালিকায় ছিল ভাত, শাকভাজা, ডাল, ডিমের ঝোল এবং পান্তুয়া।

সাহায্যকারীদের মধ্যে কেশব নাথ বলেন, ‘‘যতদিন না পরিস্থিতি আগের জায়গায় ফিরছে, আমরা ওঁদের খাবারের ব্যবস্থা করব।’’ ওই স্টেশনে কর্তব্যরত আরপিএফ কর্মী অজয় হালদার বলেন, ‘‘ট্রেন বন্ধ। রাস্তায় লোক নেই। তাই ওই মানুষগুলো খাবার জোগাড় করতে পারছেন না। কয়েক জন যুবক-যুবতী তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে দেখে ভাল লাগছে।’’

রিষড়ার একটি সংগঠনের তরফে রিষড়া স্টেশন এবং রাস্তার ভবঘুরেদের হাতে খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছে। রিষড়া থানার তরফে বৃহস্পতিবার রাতে ভবঘুরেদের রান্না করা খাবার বিলি করা হয়। অভুক্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য তাঁরা সব চেষ্টাই করবেন বলে পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement