প্রতীকী ছবি।
তাঁদের কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে সহায়তা করা। কিন্তু তাঁরা আদালতের কাজও সামলাচ্ছেন!
তাঁরা বিচারকের এজলাসে বসছেন। অস্থায়ী কর্মী হিসেবে বিচারের নথিপত্র ঠিক রাখছেন, বিচারপ্রার্থীদের শুনানির দিন জানাচ্ছেন। দু’তিন বছর ধরে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নয়া ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে। তাঁদের বেতন অবশ্য হচ্ছে পুলিশের খাত থেকেই। কিন্তু তাঁদের সাহায্য করার পরিবর্তে সিভিক ভলান্টিয়াররা ওই কাজ করায় উলুবেড়িয়া থানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশকর্তাদের একাংশ। একই সঙ্গে তাঁরা মানছেন, এ ক্ষেত্রে তাঁদের কিছু করারও নেই।
জেলা আদালতের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে, কর্মী কম থাকার জন্যই সিভিক ভলান্টিয়ারদের ওই কাজে নেওয়া হয়েছে। না হলে ওই আদালতের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অবশ্য জেলার সব আদালতেই কর্মী কম রয়েছে। কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তখন আর অস্থায়ী কর্মী রাখা হবে না।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত উলুবেড়িয়া থানার সিভিক ভলান্টিয়াররাই আদালতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসাবে কাজ করেন। মহকুমা আদালতে আট জন বিচারকের এজলাস আছে। প্রতিটি এজলাসে গড়ে আট জন করে কর্মী থাকার কথা। কিন্তু আছেন গড়ে তিন জন করে। এ ছাড়াও রেকর্ড-ঘর, নাজিরের দফতর, সমন জারি করার দফতর, জিআরও দফতর, সর্বত্র কর্মীর অভাব। সব বিভাগে অন্তত ৪০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
এমনিতে বিচারকদের নিরাপত্তা দেওয়া এবং আদালতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সিভিক ভলান্টিয়ার পাঠানো হয়। কিন্তু আদালতের অন্য কাজেও সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগে সেখানকার আইনজীবীদেরও একটা বড় অংশ অসন্তুষ্ট। শুধু তা-ই নয়, মামলার কাগজপত্র তুলতে গেলে কিছু সিভিক ভলান্টিয়ার টাকা-পয়সাও দাবি করছেন বলে আইনজীবীদের একটি অংশের অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, যে ভাবে রাস্তায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের একটি অংশ গাড়ি থেকে টাকা তোলে বলে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, সেটা ঘটে চলেছে আদালতেও। আইনজীবীদের আরও অভিযোগ, পুলিশের গন্ধ গায়ে থাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের দাপট আদালতের স্থায়ী কর্মীদের থেকে বেশি।
উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালত বার অ্যাসোসিয়েশন (সিভিল)-এর সভাপতি খায়রুল বাশার বলেন, ‘‘আমরা জানি কর্মীর অভাব আছে। সে ক্ষেত্রে দ্রুত কর্মী নিয়োগ করা উচিত। আমরা আদালতের প্রশাসনিক কাজে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের বিরোধী।’’