—ফাইল চিত্র।
মাসপাঁচেক আগে উত্তরপাড়ার হিন্দুস্থান মোটরস কারখানা থেকে যন্ত্রপাতি বের করা হচ্ছে, এই অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সেখানকার শ্রমিকেরা। একই অভিযোগে এ বার রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে’কে চিঠি দিল সিটু।
আর্থিক মন্দার কারণ দেখিয়ে ২০১৪ সালের মে মাসে কারখানাটিতে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস দেন কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকেই কারখানাটির ঝাঁপ বন্ধ। একটি মামলার জেরে গত বছরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তী ওই কারখানাটির জমি বা যন্ত্রাংশ বিক্রির উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন।
ওই স্থাগিতাদেশের পরেও কারখানা থেকে মালপত্র সরানো হচ্ছে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। দিনকয়েক আগে মুখ্যসচিবকে ওই চিঠি দেয় সিটু। কারখানার সিটু সম্পাদক শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে মালপত্র বের করার চেষ্টা করছেন। আমরা একবার সেই চেষ্টা রুখে পুলিশকে জানাই। এই ধরনের চেষ্টা আদালতকে উপেক্ষা করারই সামিল। পুরো বিষয়টি মুখ্যসচিবকে জানিয়েছি। ফের আদালতেও জানাব।’’ এ বিষয়ে চেষ্টা করেও কারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
দীর্ঘদিন ধরেই ওই কারখানা থেকে মালপত্র সরানোর অভিযোগ উঠছে। হিন্দমোটর কারখানা থেকে মাসকয়েক আগে ট্রাকে চাপিয়ে যন্ত্রাংশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ট্রাকটি কারখানা সংলগ্ন টি এন মুখার্জি রোডে ওঠার মুখে একটি যন্ত্রাংশ পড়ে যায়। কিছু শ্রমিক দেখতে পেয়ে প্রতিবাদ জানান। ট্রাক-চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে পালান। বিষয়টি জানতে পেরে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ পড়ে যাওয়া যন্ত্রাংশটি বাজেয়াপ্ত করে। পুলিশ একটি মামলাও রুজু করে সেই সময়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, এরপর কারখানা থেকে একটি জেনারেটর ও একটি কমপ্রেশার মেশিনও বের করার চেষ্টা হয়। কারখানার শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা তা রুখে দেন। বিষয়টি উত্তরপাড়া থানায় জানানো হয়। সিটু সমর্থিত ‘হিন্দমোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর পক্ষে দেবীপ্রসাদ বসুরায় বলেন, ‘‘কারাখানা বন্ধ হয়ে গেলেও এখনও বহু শ্রমিকের ভাগ্য সেখানে জড়িয়ে রয়েছে। যেখানে আদালতের নিষেধ রয়েছে, সেখানে কী করে মালপত্র বের করার চেষ্টা হয়? আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করি। পুলিশকে তখনই পুরো বিষয়টি আদালতের নির্দেশ-সহ সব জানাই।’’ ওই কারখানার অন্য ইউনিট ভিন্ রাজ্যে চালু রয়েছে। উত্তরপাড়ার কারখানার এক শ্রমিক নেতার দাবি, ‘‘বাজারে যথেষ্ট চাহিদা আছে হিন্দমোটরের গাড়ির। অযথা যন্ত্রাংশ ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে। ফের কারখানা চালুর দাবি জানাচ্ছি।’’