পাকড়াও: আদালতের পথে উপেন্দ্র ও রিনা সিংহ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
তাঁরা নিজেদের পরিচয় দিয়েছিলেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসেবে। জানিয়েছিলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তাঁরা সরাসরি চাকরি করে দেন। শুক্রবার হাওড়ার গোলাবাড়ি থেকে এমনই এক দম্পতি এবং তাঁদের এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা চার যুবককে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে ১৫ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, আরও টাকা দিতে না পারায় ওই চার জনের উপরে অত্যাচার চালানোর অভিযোগও উঠেছে ধৃতদের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পতির নাম উপেন্দ্র সিংহ ও রিনা সিংহ। অন্য ধৃতের নাম কৃষ্ণ সিংহ। এ দিন হাওড়া আদালতে বিচারক তাঁদের ৮ দিন পুলিশি হেফাজত দেন।
পুলিশ জানায়, গোলাবাড়ি থানার ওড়িয়া পাড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণের আসল বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় গাজিপুরের চার যুবক উমেশকুমার গোন্ড, জয়প্রকাশ যাদব, ব্রিজেশ সিংহ যাদব ও জিতু কুমারের। কৃষ্ণর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্তা বলে পরিচয় দিয়ে ওই চার যুবককে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সে জন্য এপ্রিলে তাঁদের গোলাবাড়ি থানা এলাকায় ডেকে নিজের বাড়িতে রাখেন।
পুলিশ জেনেছে, কৃষ্ণ ওই চার যুবককে বলেন, উপেন্দ্র ও রিনা তাঁর আত্মীয়। অভিযোগ, ওই দম্পতি মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বলে পরিচয় দিয়ে জানান, তাঁদের সঙ্গে সেনার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। সেখানে তাঁরা চাকরি করে দেন। ওই চার যুবকের আসল মার্কশিট, শংসাপত্র-সহ শিক্ষাগত যোগ্যতার সব কাগজ জমা নিয়ে নেন ওই দম্পতি। জুনে তাঁদের রিনা সিংহ ও সাদ্দাম আনসারি নামে এক ব্যক্তির দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে বলা হয়, ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা করে সেখানে জমা দিতে। তবেই চাকরি হবে।
পুলিশ জেনেছে, ওই মাসেই রিনা ও সাদ্দামের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ১৫ লক্ষ টাকা দেন চার চাকরিপ্রার্থী। দিন কয়েক পরে তাঁরা জানতে পারেন, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে এটিএম কার্ডে দিয়ে টাকা তুলতে শুরু করেছেন উপেন্দ্র ও রিনা। এরও কিছু দিন পরে কৃষ্ণ চার যুবককে জানান, আরও এক লক্ষ করে টাকা করে না দিলে চাকরি হবে না। কিন্তু ওই যুবকেরা জানান, আর টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।
অভিযোগ, এর পরেই তাঁদের একটি ঘরে আটকে রেখে শুরু হয় শারীরিক অত্যাচার। তখন ওই চার জন বুঝতে পারেন, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার এক যুবক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।