Hearse van

কোভিড মৃতদেহ বহনে বেশি ভাড়ার অভিযোগ

ওই মহিলার দুই ছেলে ও পুত্রবধূরাও কোভিড আক্রান্ত হয়ে গৃহ-নিভৃতবাসে রয়েছেন।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৫৬
Share:

—প্রতীকী ছবি

নার্সিংহোমে মৃত কোভিড রোগীর দেহ নিয়ে যেতে শববাহী গাড়ির বেশি ভাড়া হাঁকার অভিযোগ উঠল হুগলিতে। এ ক্ষেত্রে দর বেঁধে দেওয়ার দাবি তুলেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক’ (সিসিএন)।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ৭ ডিসেম্বর হৃদরোগ নিয়ে ভদ্রকালীর সত্তর বছরের এক মহিলা উত্তরপাড়া স্টেশনের কাছে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। গত শনিবার তাঁর করোনার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানেই তিনি মারা যান।

ওই মহিলার দুই ছেলে ও পুত্রবধূরাও কোভিড আক্রান্ত হয়ে গৃহ-নিভৃতবাসে রয়েছেন। মহিলার দেহ নার্সিংহোম থেকে বের করার কাজে সিসিএন-এর সদস্যেরা যান। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানান, দেহ শ্রীরামপুর ওয়ালশের মর্গে পাঠানো হবে। এ জন্য শববাহী গাড়ি বাবদ ৮ হাজার টাকা লাগবে। এত টাকা কেন লাগবে, সদুত্তর পাননি সিসিএন-এর সদস্যেরা। তাঁদের তরফে তাপস নস্কর জানান, বিকেলে একটি শববাহী গাড়িতে তিন জন আসেন। তাঁরা জানান, শ্রীরামপুর থেকে এসেছেন। দেহ নিয়ে যেতে সাড়ে ৮ হাজার টাকা লাগবে। অনেক অনুনয়ের পরে পাঁচশো টাকা কম দিতে বলেন। তাপসবাবুর বক্তব্য, ‘‘উত্তরপাড়া থেকে শ্রীরামপুর ১০ কিলোমিটার। এমনিতে শববাহী গাড়ি দু’-আড়াই হাজার টাকা নেয়। এ ক্ষেত্রে তার তিন গুণ টাকা কেন গুনতে হবে জিজ্ঞাসা করায় গাড়ির লোকেরা জানান, উত্তর দিতে পারবেন না। তাঁরা ফিরে যেতেও উদ্যত হন। নিরুপায় হয়ে ৮ হাজার টাকাই দিই।’’

Advertisement

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, শ্রীরামপুর মহকুমায় কোভিডে কেউ মারা গেলে দেহ শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে সংরক্ষণ করা হয়। প্রশাসনের তরফে নির্দিষ্ট শ্মশানে দাহ করা হয়। কোভিড হাসপাতাল থেকে প্রশাসনই দেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে।

সিসিএন-এর সদস্যদের বক্তব্য, গাড়ির লোকেরা পিপিই পরে থাকলে কিছুটা বেশি টাকা লাগতে পারে। কিন্তু তিন জনের এক জনও পিপিই দূরঅস্ত্‌, গ্লাভস পর্যন্ত পড়ে ছিলেন না। তাপস বলেন, ‘‘আরও বেশি চাইলেও কিছু করার থাকত না। গরিব মানুষ এই পরিস্থিতিতে পড়লে কী করবেন? চাঁদা তুলতে হবে! একটা ন্যায্য অঙ্কের টাকা প্রশাসন বেঁধে দিক।’’ প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি দেখা হবে।

শুধু তাই নয়, মর্গ থেকে মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার খবর পরিজন ঠিকমতো পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ। ওই সংগঠনের এক সদস্য জানান, ২০ তারিখ শ্রীরামপুর শ্রমজীবী কোভিড হাসপাতালে উত্তরপাড়ার এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। দেহ ওয়ালশের মর্গে পাঠানো হয়। কিন্তু, সৎকারের খবর বাড়িতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বুধবার ওই সংগঠনের লোকেরা প্রশাসনিক দফতরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মঙ্গলবার দেহটি সৎকার করা হয়েছে।

সিসিএন-এর এক সদস্য বলেন, ‘‘দাহ কোথায় কখন হচ্ছে, জানতে না পারলে বাড়ির লোকের দুশ্চিন্তা স্বাভাবিক। সরকারি নিয়মেই রয়েছে, দাহের সময় মৃতের বাড়ির তরফে সর্বাধিক ছ’জন থাকতে পারেন। পারলৌকিক কাজও করা যায়। অথচ জানতেই না পারলে কী করে হয়! সব ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই এটা হচ্ছে না। কিন্তু একটি ক্ষেত্রেও যেন না হয়, সেটা দেখা দরকার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement