অতিমারির পুজো মনে রাখতে চায় না চন্দননগর, অপেক্ষা সামনের বছরের

নবমী নিশিতে শুধু মা চলে যাওয়ার দুঃখ নয়, এ বারে যেন আরও অনেক দুঃখ কাঁধে নিয়ে দিন কাটছে চন্দননগরের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২০ ১৯:৫৯
Share:

সোমবার চন্দননগরে নবমী পুজো হয়েছে কোভিড বিধি মেনে। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবার নবমী নিয়ে আসে বিষাদ। দশমীতে বিসর্জনের সুর বাজে নিয়ম মেনেই, আর অপেক্ষা থাকে আগামীর। তবে এ বছর চিত্রটা যেন আলাদা। ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগর এ বার মনে প্রাণে চাইছে, সময় যত দ্রুত চলে যায় যায় ততই ভাল। আগামী বছরের অপেক্ষায় থাকতে মানুষের কোনও অসুবিধা হবে না। কারণ, অতিমারির পুজো মনেও রাখতে চায় না চন্দনননগর!

Advertisement

এ বছর আটটি সুবর্ণ জয়ন্তী, দুটি রজত জয়ন্তী, প্রাক সুবর্ণ জয়ন্তী ছিল সাতটি পুজোর। বোড় কালীতলা বাই লেন, সরিষা পাড়া, তাঁতির বাগান, মধ্যাঞ্চল, বৈদ্যপোতার মতো নামী পুজোর উদ্যোক্তারা প্রস্তুতি নিয়েছিলেন এ বারের পুজোয় চমক দিতে। কিন্তু সব আয়োজনে জল ঢেলে দিল করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত।

সাবেক শহরের বারোয়ারি পুজোগুলির থিম কী হবে, তা নিয়ে প্রতি বছর থাকে নানা জল্পনা, কল্পনা। সব চেয়ে বেশি আকর্ষণ থাকে শোভাযাত্রার। প্রতি বার চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে ৭০-৭২টি পুজো শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। আলো দিয়ে সাজানো হয় লরি। যে আলোর খেলা দেখতে বাইরে থেকে যেমন অনেকে আসেন, তেমনই আলো দেখেই পরের বছরের দুর্গা পুজোর বায়না দিতেও আসেন কেউ কেউ। চন্দননগরের শোভযাত্রার আলো পায় স্বতন্ত্র রূপ। এ বছর সে সব কিছুই নেই। ‘‘সামনের বছরের পুজোর বায়না নিয়েও চিন্তায় রয়েছি’’, বললেন আলোকশিল্পী বাবু পাল। তবে এ বারে যারা পুজোর বিশেষ বর্ষটি পালন করতে পারেনি, তারা আগামী বছর সেই বহরে পুজোর আয়োজন করার সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছে চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা জিতেও প্রয়াত অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ

সোমবার চন্দননগরে নবমী পুজো হয়েছে কোভিড বিধি মেনে। চাউলপট্টি আদি মায়ের পুজোয় অঞ্জলি দিতে আসা ভক্তদের প্রবেশ এ বারে আর অবাধ ছিল না। পুজো দালানের বাইরে দাঁড়িয়ে অঞ্জলি দেওয়া আর ফুল না ছুড়ে নির্দিষ্ট জায়গায় ফুল ফেলার ব্যবস্থা করা হয় এ বার। কয়েকটি বারোয়ারিতে কুমারী পুজোও হয় বিধি মেনেই। অন্যান্য জায়গায় নবমীতে এক সঙ্গে তিনদিনের পুজো হলেও চন্দনননগরে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীতে আলাদা করে পুজো হয়। সেই সবই হল নিয়ম মেনেই। তবু তাল কাটল বারবার। বারবার মন খারাপ হল সুন্দরী চন্দননগরের। কোথায় সেই গাদাগাদি ভিড়, কোথায় নবমীর উন্মাদনা, সব ছিল সুনসান। তাই নবমী নিশিতে শুধু মা চলে যাওয়ার দুঃখ নয়, এ বারে যেন আরও অনেক দুঃখ কাঁধে নিয়ে দিন কাটছে চন্দননগরের।

আরও পড়ুন: ফাঁকা ঘরে এখনও উচাটন পৌলমী

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement