খুনের ঘটনায় হাওড়া পুরসভার এক কাউন্সিলরের জড়িত থাকার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তদন্তকারী অফিসার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার ওই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তের জামিনের আবেদনের মামলায় বিষয়টি নজরে আসে বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের। বিচারপতি রায় রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে নির্দেশ দিয়েছেন, ওই কাউন্সিলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত করতে। একই সঙ্গে ওই দুই অভিযুক্তের জামিন খারিজ করে দিয়েছে
ডিভিশন বেঞ্চ।
পুলিশ জানায়, গত ১৭ জুন হাওড়া থানার ২০ নম্বর রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনের একটি বহুতলের কেয়ারটেকার বিজয় মল্লিক খুন হয়েছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বিজয় একটি জমির অন্যতম অংশীদার ছিলেন। অন্য অংশীদারদের সঙ্গে একমত হয়ে বিজয়বাবু এক প্রোমোটারকে সেই জমিতে বহুতল নির্মাণ করার বরাত দিয়েছিলেন। তদন্তে আরও জানা যায়, ওই নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন হাওড়া পুরসভার এক কাউন্সিলর। সেই কাউন্সিলরও প্রোমোটারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অন্য প্রোমোটারকে নির্মাণের বরাত দেওয়ায় বিজয়ের উপরে ওই কাউন্সিলর রুষ্ট হয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
সরকারি কৌঁসুলি পার্থপ্রতিম দাস জানান, ইতিমধ্যে বিজয় খুনে জড়িত থাকার অপরাধে দশ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে সঞ্জয় যাদব নামে ইন্ডো-টিবেটিয়ান ফোর্সের এক জওয়ানও রয়েছেন। গ্রেফতার করা হয় প্রহ্লাদ সিংহ ও বিক্রম মণ্ডল নামে দুই যুবকও। পুলিশের দাবি, ধৃত সঞ্জয় জেরায় কবুল করে, তাঁকে খুনের বরাত দেন ওই কাউন্সিলর। গ্রেফতার হওয়া কয়েক জন দুষ্কৃতীও জেরায় ওই কথা সমর্থন করে। তা সত্ত্বেও ওই কাউন্সিলরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেননি তদন্তকারী অফিসার। এমনকী, কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিটও দেননি।
এই প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন প্রহ্লাদ ও বিক্রম। এ দিন সেই আবেদনের শুনানি ছিল। ধৃতেরা পুলিশের কাছে যে জবানবন্দি দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখে বিচারপতি অসীম রায়
সরকারি কৌঁসুলির কাছে জানতে চান, কী কারণে ওই কাউন্সিলরকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করা হয়নি। তাঁর ঠবিরুদ্ধে তদন্তও কেন হয়নি তা-ও জানতে চান বিচারপতি রায়। তদন্তে গাফিলতির বিষয়টি মেনে নেন সরকারি কৌঁসুলি। ডিভিশন বেঞ্চ দুই অভিযুক্তের জামিন খারিজ করে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে খুনের নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করতে।