শিশুর উপর যৌন হেনস্থা বন্ধে শিবির স্কুলে

কলকাতার দু’টি বেসরকারি স্কুলে দুই শিশুকন্যার উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় গোটা রাজ্য। সপ্তাহ খানেক আগে বাঁশবেড়িয়ায় একটি স্কুলেও একই রকমের অভিযোগ উঠেছে। আর  পরপর এমন ঘটনার জেরে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ।

Advertisement

প্রকাশ পাল

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share:

কলকাতার দু’টি বেসরকারি স্কুলে দুই শিশুকন্যার উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় গোটা রাজ্য। সপ্তাহ খানেক আগে বাঁশবেড়িয়ায় একটি স্কুলেও একই রকমের অভিযোগ উঠেছে। আর পরপর এমন ঘটনার জেরে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ।

Advertisement

‘শিশুর সুরক্ষা’ নিয়ে সম্প্রতি হুগলিতে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে হয়ে গেল প্রশিক্ষণ শিবির। জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের উদ্যোগে সেখানে চাইল্ড লাইনের আধিকারিকরা প্রশিক্ষণ দেন। শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা অনেকের বক্তব্য, অনেক শিশু নির্যাতনের কথা বাড়িতে বলতে ভয় পায়। টানা নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি ধরা পড়ে। শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব পড়ে। কোন্নগর নবগ্রামের বাসিন্দা তথা একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা রাজেশ্বরী গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আমার একরত্তি একটা মেয়ে আছে। এমন ঘটনায় শিউরে উঠছি। আমার মনে হয়, আগে বড়দের জন্য সচেতনতা জরুরি। শিশুকেও যতটা সম্ভব বোঝাতে হবে। এ ছাড়া উপায় কী!’’

জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর গোপীবল্লভ শ্যামল বলেন, ‘‘মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও হেনস্থার শিকার হয়। ভাল এবং খারাপ স্পর্শ নিয়ে শিশুকে বোঝাতে হবে। কেউ খারাপ স্পর্শ করলে কী করণীয়, তা শেখাতে হবে। বিভিন্ন স্কুলে এমন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি স্কুলেও তা করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রে শিশু বাড়িতে বললেও বাবা-মা বলতে বারণ করেন। এই প্রবণতা খারাপ। তাই শিশুর অভিভাবকদেরও সচেতন করতে হবে। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সাহিনা সুলতানার বক্তব্য, ‘‘এমন ঘটনায় আমরাও চিন্তিত। স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপর যৌন হেনস্থা বন্ধে আমাদের তরফে কী কর্মসূচি নেওয়া হবে, শীঘ্রই আলোচনার মাধ্যমে তা ঠিক করা হবে।’’

Advertisement

মনোবিদ মোহিত রণদীপের বক্তব্য, শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন আসলে একটি অসুখ। পরিভাষায় ‘পেডোফিলিয়া’। এতে শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ তৈরি হয়। অনেক কৃতী বা আপাত সংবেদনশীল মানুষেরও এই সমস্যা থাকতে পারে। এঁরা ছোটবেলায় যৌন হেনস্থার শিকার হয়ে থাকতে পারেন। মোহিতবাবু বলেন, ‘‘বিচারের পাশাপাশি যৌনতাভিত্তিক অসুখ নিয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়া জরুরি। তাতে আক্রান্ত ব্যক্তিও অসুখ সম্পর্কে অবহিত হয়ে চিকিৎসা করাতে পারবেন। শিশুকেও সংবেদশীল করে তোলা দরকার। ভাল-মন্দের ফারাক শিশু বোঝে। অপছন্দের স্পর্শ হলে বড়দের জানাতে হবে, এটা যেন তাকে শেখানো হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement