প্রতীকী টাকা
দুষ্কৃতীরা মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করেছিল প্রায় এক কোটি টাকা!
শেষমেশ ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে মুক্ত হলেন দু’দিন ধরে অপহৃত ডানকুনির এক রং ব্যবসায়ী। পুলিশের কাছে এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। তবে, রিষড়ার বাঙুর পার্ক এলাকার বাসিন্দা, আসিক আনসারি নামে ওই ব্যবসায়ীর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি অপহৃত হওয়া এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি ছাড়া পাওয়ার পিছনে অনেক রহস্য এখনও অধরা বলে দাবি পুলিশের।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যবসায়ী পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। দুষ্কৃতীরা কারা, কোথায় তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল, তা তিনি বুঝতে পারেননি বলে দাবি করেছেন। কিন্তু এ তথ্য ঠিক নয়। এর পিছনে ব্যবসায়িক রেষারেষি বা অন্য কোনও কারও থাকতে পারে। ব্যবসায়ী তা পুরোপুরি চেপে যাচ্ছেন। খোলসা করছেন না। মুক্তিপণ কী ভাবে দেওয়া হল, তা-ও তাঁরা জানাচ্ছেন না।
চন্দনননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘আপাতত মনে হচ্ছে, ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই ওই ঘটনা। তবে ওই ব্যবসায়ী তদন্তকারীদের কাছে অনেক কথাই গোপন করছেন। পুলিশ পুরো ঘটনাটাই খতিয়ে দেখছে।’’
ডানকুনিতে দিল্লি রোড লাগোয়া এলাকায় আসিকের একটি রঙের কারখানা রয়েছে। তাঁর ছেলে মহম্মদ আফতাব পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছিলেন, ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁর বাবা যখন ব্যবসাস্থল থেকে ফিরছিলেন, তখন দুষ্কৃতীরা তাঁকে অপহরণ করে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কোনও অজ্ঞাতস্থানে। তারপর বাবার থেকে ফোন নম্বর নিয়ে বাড়িতে ফোন করে দুষ্কৃতীরা এক কোটি টাকা দাবি করে। টাকা না-দিলে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯ তারিখ রাতে তারকেশ্বরের কোনও একটা জায়গায় তাঁকে দুষ্কৃতীরা ছেড়ে দিয়ে গা-ঢাকা দেয়।
এক তদন্তকারী পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘ওই ব্যবসায়ীকে বার বার জিজ্ঞাসা করে হচ্ছে, কোথাও তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল? তিনি বলছেন, তাঁর চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল। সেই কারণেই তিনি কিছু বুঝতে পারেননি। তবে অনেক বেশি টাকা দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত ৩০ লক্ষ টাকা ওই ব্যবসায়ী মুক্তিপণ দেন। কারণ, তাঁর নাতনিকেও নাকি দুষ্কৃতীরা তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিল!’’
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই ব্যবসায়ীর বিহারেও ব্যবসা রয়েছে। সেই সংক্রান্ত কোনও কারণ অপহরণের নেপথ্যে রয়েছে কিনা, পুলিশ তা-ও খতিয়ে দেখছে।