সজ্জিত: উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ছবি: দীপঙ্কর দে
জাঙ্গিপাড়া এবং উদয়নারায়ণপুরের মধ্যে যাতায়াত করতে প্রায় পাঁচ বছর ধরে বিস্তর দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে দুই জেলার বাসিন্দাদের। অবশেষে তাঁদের সেই দুর্ভোগ মিটতে চলেছে। দুই জেলার ওই দুই ব্লকের সংযোগ ঘটাতে দামোদরে উপরে নির্মিত নতুন বকপোতা সেতু চালু হচ্ছে। আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খড়্গপুরে পরিষেবা প্রদানের সভা করতে যাচ্ছেন। সেখান থেকেই তিনি সেতুটির উদ্বোধন করবেন। এতে উপকৃত হবেন দুই ব্লকের অন্তত ২০ পঞ্চায়েতের কয়েক লক্ষ মানুষ।
প্রায় ৩২ কোটি টাকা খরচ করে ৪০ ফুটেরও বেশি চওড়া এবং অন্তত ৬০০ ফুট লম্বা সেতুটি তৈরি করেছে পূর্ত দফতর। উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা এবং জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী সেতুটি তৈরির জন্য সরকারি স্তরে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন। আজ, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুই বিধায়কই জাঙ্গিপাড়ায় উপস্থিত থাকবেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তমাল চন্দ্র বলেন, ‘‘নতুন সেতুতে পাশাপশি দু’টি গাড়ি ভাল ভাবেই চলতে পারবে। কারণ, সেতুর পরিসর যথেষ্ট বেশি। দু’পারের মানুষের সুবিধার জন্য অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি করা হয়েছে। সেতুতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও হয়েছে।’’
বকপোতাতে সেচ দফতরের যে পুরনো সঙ্গীর্ণ সেতুটি রয়েছে, তার পাশেই গড়ে উঠেছে নতুন সেতু। ২০১৪ সালে পুরনো সেতুটির থাম বসে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দু’পারের মানুষ রীতিমতো সমস্যায় পড়েন। ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেকটাই সেতুটির উপর নির্ভরশীল ছিল। এলাকাবাসী সেতুটি দ্রুত সারানো বা ওই এলাকায় বিকল্প সেতু নির্মাণের দাবি তোলেন। পুরনো সেতুটি এতটাই অপরিসর যে পাশাপাশি দু’টি বড় মালবাহী গাড়ি একসঙ্গে যেতে পারত না। একটি গাড়ি গেলে অন্য গাড়িকে সেতুর এক প্রান্তে অপেক্ষা করতে হত। ফলে, যানজটের সমস্যাও ছিল নিত্যদিন। তাই এলাকাবাসী দাবি তোলেন, ওই সেতুকে সংস্কার করা হলে, তা যেন অপরিসর না হয়।
কিন্তু প্রশাসন ঝুঁকি নেয়নি। তারা নতুন সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয় নির্মাণকাজ। ২০১৪ সাল থেকে তিন বছর পুরনো সেতু দিয়ে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল। যানবাহন
ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল অন্য রুটে। বাসগুলি যাচ্ছিল পেঁড়ো হয়ে। বছর দুয়েক আগে পুরনো সেতুটি কিছুটা মেরামত করা হয়। ছোট গাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র মেলে। কিন্তু গত অক্টোবরের বন্যায় পুরনো সেতুতে দামোদরের জল উঠে আসায় অশনিসঙ্কেত দেখে সেচ দফতর। ওই দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, নতুন সেতু চালু হলে পুরনোটি ভেঙে ফেলা হবে।