রক্ত দান করছেন অর্ণব মণ্ডল।
দু’মাসের শিশুর জন্য প্রয়োজন ছিল রক্তের। একাধিক ব্লাড ব্যাঙ্কে ঘুরেও তা জোগাড় করতে পারেননি তার বাবা দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার বসির আলি সেপাই। অবশেষে তাঁর এক আত্মীয় রক্তের প্রয়োজনের কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেন। সেই পোস্ট দেখে শিশুটিকে বাঁচাতে শনিবার ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত দিলেন পাঁচলার বাসিন্দা অর্ণব মণ্ডল। শিশুটি কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তিন দিন আগে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভোগা শিশুটিকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বলে জানান তার বাবা। তিনি বলেন, ‘‘ওর ওজন কমে যাচ্ছিল। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, দ্রুত রক্ত দিতে হবে। তিন দিন ধরে রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছিলাম। আজ রক্ত পেয়ে আনন্দে চোখে জল আসছে। ধর্মের বেড়া ভেঙে যে রক্তদান করে, সে সব ধর্মের ঊর্ধ্বে।’’
অনেক ছোটাছুটির পরেও রক্ত না মেলায় বসিরের এক আত্মীয় ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেই পোস্টটি শেয়ার করেন পাঁচলার সমাজকর্মী রেজাউল করিম। শনিবার পোস্টটি নজরে আসার পরে অর্ণব রক্ত দিতে যান ফুলেশ্বরের ওই বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে। পরে সেই রক্ত সংগ্রহ করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান বসির।
অর্ণব বলেন, ‘‘ফুটফুটে একটি শিশু রক্তের জন্য ছটফট করছে, এই খবর শোনার পরে নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি।’’ এই নিয়ে ৩৪ বার রক্ত দিলেন ওই যুবক। তাঁর কথায়, ‘‘ছোটবেলা থেকেই বাবা-মাকে রক্তদান করতে দেখেছি। তাঁদের অনুপ্রেরণায় রক্তদান করি।’’
উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার বলেন, ‘‘লকডাউনের সময় থেকেই রক্তের সঙ্কট চলছে। নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের সঙ্কট আরও বেশি।’’ অর্ণবকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।