বন্ধ: প্রাণ বাঁচাতে তালা অফিসে। নিজস্ব চিত্র।
কোথায় মনোনয়ন জমার তোড়জোড়! সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা। মনোনয়ন জমার শেষ দিন। সিপিএমের জাঙ্গিপাড়ার এরিয়া অফিসে তালা!
বাম আমলে ওই অফিস ছিল ‘লালদুর্গ’। বিরোধীরা জুজু হয়ে থাকত। সেখানে এখন এই অবস্থা! সিপিএম নেতারা বলছেন, ‘‘প্রাণের মায়া আছে না! তৃণমূলের লোকজন সকালে এসে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে। তাই তালা ঝুলিয়ে সরে যেতে হয়েছে।’’ তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ফুরফুরা থেকে সিপিএমের ৩০-৩৫ জন প্রার্থী ও নেতারা জড়ো হয়েছিলেন ওই দোতলা অফিসে। কিন্তু তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে কিছু লোক সেখানে হানা দিয়ে প্রথমে হুমকি, তারপরে গালিগালাজ এবং শেষে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। দলের এরিয়া সম্পাদক অলোক রায়চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘মহিলাদেরও রেয়াত করা হয়নি। বেগতিক দেখে প্রার্থীরা পালান। এক সময় আমাদের এক কর্মীর খোঁজ মিলছিল না। এমন আতঙ্ক তৈরি করা হয় যে আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যেতে পারিনি।’’ পুলিশ বা প্রশাসনের সহযোগিতা না-পাওয়ার অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
এই ঘটনা-সহ জেলায় বেলাগাম ‘সন্ত্রাস’-এর প্রতিবাদে এ দিন শ্রীরামপুরে সিপিএম সাংবাদিক বৈঠক করে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ওখানে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কোনও পরিস্থিতি ছিল না। আমি পুলিশ সুপারকে ফোন করায় উনি ডিএসপি-র ফোন নম্বর ধরিয়ে দেন। পুলিশ তারিয়ে তারিয়ে শাসকদলের বেলাগাম, বেনজির সন্ত্রাস উপভোগ করল।’’ জাঙ্গিপাড়ার বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ বাগও সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁরা সে কথা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন বলে জানান ওই নেতা।
পুলিশ কী করছিল?
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা ওঁদের (সিপিএম) অনুরোধ করি ১০ থেকে ১২ জনের দল করে আপনারা আসুন। পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে মনোনয়ন জমা করিয়ে দেবে। সকাল ১১টা থেকে মনোনয়ন শুরু। কিন্তু পুলিশ সিপিএমের ওই কার্যালয়ে পৌনে ১১টার সময় গিয়ে দেখে বড় তালা।’’ জাঙ্গিপাড়ায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক শুভলক্ষ্মী বসু বলেন, ‘‘আমরা মনোনয়নের জন্য অপেক্ষাতেই ছিলাম। দুপুর দু’টো নাগাদ আসার সময় পথে কোথাও কোনও জমায়েত দেখিনি।’’
বিরোধীদের তোলা সন্ত্রাস, মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তের দাবি, ‘‘কোথাও কিছু হয়নি। বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। এটাই বাস্তব। আমরা তো আর ওদের প্রার্থী এনে দিতে পারব না!’’