চার দশকের দুই পঞ্চায়েত থেকেও বিদায় বামেদের 

ভোটের ফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতি এবং তিনটি জেলা পরিষদ আসন বামেদের হাতছাড়া হয়েছে। ১৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে এ বার একটিতেও নেই তারা।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০৩:০৩
Share:

চার দশক ধরে তারা রাজত্ব চালিয়েছেন। এ বার হুগলির তেমনই দুই পঞ্চায়েত থেকেও সরতে হল বামেদের!

Advertisement

রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই বামেদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। তার মধ্যেও ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে প্রবল তৃণমূল-ঝড়েও সিপিএমকে নড়ানো যায়নি চণ্ডীতলা-১ ব্লকের শিয়াখালা পঞ্চায়েত এবং হরিপালের প্যাঁটরা পঞ্চায়েত থেকে। এই দুই পঞ্চায়েতেই চার দশক তারা ক্ষমতায় ছিল। এ বার পান্ডুয়ার পাশাপাশি ওই দুই পঞ্চায়েত এবং বলাগড়ের একটি পঞ্চায়েতও তাদের হাতছাড়া হল। মুখে শাসকদলের সন্ত্রাসের কথা বললেও জেলা সিপিএম নেতৃত্বের একাংশ এই হারের নেপথ্যে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা ঠারেঠোরে স্বীকার করেছেন।

ভোটের ফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতি এবং তিনটি জেলা পরিষদ আসন বামেদের হাতছাড়া হয়েছে। ১৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে এ বার একটিতেও নেই তারা। ১৩টি জিতেছে তৃণমূল। তিনটি ত্রিশঙ্কু। এই খবর পাওয়ার মধ্যেই সিপিএম নেতৃত্বের কাছে ফের দুঃসংবাদ— শিয়াখালা এবং প্যাঁটরা। দুই পঞ্চায়েতেই তারা শোচনীয় ভাবে হেরেছে। শিয়াখালা পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১৩টি, বামেরা মাত্র তিনটি। প্যাঁটরার ১২টি আসনের মধ্যে ৮টি গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে। বাকিগুলি বামেরা পেয়েছে।

Advertisement

জেলা সিপিএমের একাংশ মানছেন, গতবারেও শাসকদল সন্ত্রাস চালিয়েছে। তা সত্ত্বেও পান্ডুয়া-সহ ওই তিন পঞ্চায়েতে ক্ষমতা ধরে রাখা গিয়েছিল। কিন্তু এ বার সংগাঠনিক দুর্বলতা এত প্রকট হয়ে দাঁড়ায় যে তাদের সরে যেতে হল। জেলা সিপিএমের এক প্রবীণ নেতা বলেন, ‘‘শাসকের সন্ত্রাস নতুন নয়। তা সত্ত্বেও আমাদের টিকে থাকার রসদ নিজেদের জোগাড় করতে হবে। তা আমরা পারিনি। দলের এক শ্রেণির কর্মী অনেক সময়েই সন্ত্রাসের কথা বলে নিজেদের কর্তব্য ভুলে যাচ্ছেন। সেটা করলে আখেরে দলেরই ক্ষতি।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘কিছু ক্ষেত্রে আমাদের সংগঠনিক সমস্যা থাকলেও এ বার জেলায় লুটেরাদের ভোট হয়েছে। গোঘাটে দু’টি জেলা পরিষদ আসনে আমাদের মনোনয়নই জমা দিতে দেয়নি শাসকেরা।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এই আমলে পঞ্চায়েতের কাজ মানুষ দেখেছেন। ৩৪ বছরের সিপিএম জমানার স্মৃতি মানুষের মনে আজও দগদগে। মানুষ বামেদের ফাঁদে আর পা দেবেন না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement