ক্ষোভ: এই গাড়িই ভাঙচুর করা হয়। নিজস্ব চিত্র
রাতের বেলায় পাঁচ তরুণ এবং এক তরুণীকে নিয়ে একটি গাড়িকে বেপরোয়া গতিতে দৌড়তে দেখে বৃহস্পতিবার আতঙ্ক ছড়িয়েছিল উত্তরপাড়ার মাখলায়। তার জেরে ওই রাতেই তেতে ওঠে মাখলা, ভদ্রকালী ক্যাম্প এবং সখের বাজার এলাকা। দফায় দফায় এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে মারধরে জড়ালেন গাড়ির আরোহীরা। ভাঙচুর চালানো হল ওই গাড়িটিতে।
ঘটনার প্রতিবাদে ভদ্রকালী ক্যাম্পের মহিলারা শুক্রবার দুপুরে জিটি রোড অবরোধ করেন। চন্দননগর কমিশনারেটের এসিপি অতুল ভি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। পুলিশ শিলাজিৎ দে ওরফে বাপ্পা নামে ওই গাড়ির এক আরোহীকে গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে গাড়িটি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে মাখলার টি এন মুখার্জি রোড দিয়ে গাড়িটি উত্তরপাড়া স্টেশনের দিকে যাচ্ছিল। গতি এতটাই বেশি ছিল যে অনেকে আতঙ্কে সরে যান। লেভেল ক্রসিংয়ের গেট পড়ে যাওয়ায় গাড়িটি দাঁড়ায়। ক্ষিপ্ত লোকজন গাড়িটিকে ঘিরে ধরেন। আরোহীদের কাছে জোরে গাড়ি চালানোর কৈফিয়ত চাওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, মদ্যপান করে ওই তরুণেরা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তাঁরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের ঘনিষ্ঠ বলেও দাবি স্থানীয়দের। গোলমালের খবর পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ ঘোষ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি পরিস্থিতি কিছুটা সামলান। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। বিষয়টি তখনকার মতো ধামাচাপা পড়লেও রাত বাড়তেই ফের অশান্তি ছড়ায়। পুলিশ জানায়, ওই তরুণেরা ভদ্রকালী ক্যাম্প লাগোয়া এলাকায় একটি ক্লাবে আবার মদ্যপান করে। তারপর দলবল জুটিয়ে ক্যাম্প এলাকার কয়েকজনকে মারধর করা হয়। এরই পাল্টা হিসেবে ভদ্রকালী ক্যাম্প থেকে সখের বাজার এলাকা পর্যন্ত ওই তরুণদের ধাওয়া করে পাল্টা মারধর করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
দু’পক্ষই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের স্থানীয় নেতাদের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ তরুণ মিলেই এলাকায় অশান্তি তৈরি করছে। বিষয়টির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। শনিবার সকালে তৃণমূলের এক কাউন্সিলর থানায় যান। কিন্তু সেই সময় ভদ্রকালী ক্যাম্পের মহিলারা থানায় বিক্ষোভ দেখাতে গেলে তিনি সেখান থেকে কার্যত পালিয়ে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তরপাড়ার একাধিক বাসিন্দার ক্ষোভ, উত্তরপাড়া শান্তিপ্রিয় জায়গা। শাসকদলের গোষ্ঠী বিবাদের জন্য এলাকার শান্তি নষ্ট হচ্ছে।
হুগলি জেলা তৃণমূলও বিষয়টি ভাল ভাবে নিচ্ছে না। জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তের আশ্বাস, “আমাদের যে নেতারা অশান্তিকে প্রশয় দিচ্ছেন তাঁদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”