রেনেসাঁ ক্লাবের কার্তিক ও মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র
একে একে সব পুজো শেষ। কার্তিক মাসের সংক্রান্তিতে আজ, শনিবার কার্তিক পুজো। তবে একা দেব সেনাপতি নন, কার্তিকের শহর বাঁশবেড়িয়ায় এ দিন পুজিত হবেন সব দেবদেবীরাই। সেই সঙ্গে রয়েছে থিমের ধুম। কোথাও অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির, তো কোথাও আলোর ভিতর জলের নাচ— চমকে দিতে তৈরি সব পুজো উদ্যোক্তারাই।
বাঁশবেড়িয়া অনির্বাণ ক্লাবের পুজো মণ্ডপের থিম আলোর মধ্যে জলের খেলা। প্রতিমা দর্শনের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা দাঁড়িয়ে দেখবেন জলের খেলা। ক্লাবের কর্মকর্তা অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘জলের খেলা এমনই যে আমরা ছাতার ব্যবস্থা করছি। এ এক অভিনব বিষয়।’’
জলের থিমেই বাজিমাত করতে চাইছে মিলন পল্লি নটরাজ পুজো কমিটি। তাদের থিম অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দির। জলের ভিতর প্রাচীন মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। পুজো কমিটির সভাপতি সত্যরঞ্জন শীল বলেন, ‘‘পুজোর চার দিন অমৃতসর থেকে এসে শিখ সম্প্রদায়ের ১০০ জন পুরুষ ও মহিলা শহরে থাকবেন। তাঁরা মণ্ডপে ভজন গাইবেন।’’ পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, এমন আয়োজন এর আগে বাঁশবেড়িয়ায় কখনও হয়নি। ফলে ভিড় সামলাতে তাঁরা একশোর বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করছেন।
জুনিয়ার বালক সঙ্ঘের পুজো এ বার ৬০ বছরে পা দিয়েছে। এ বার তাদের থিম কেরলের মীনাক্ষি মন্দির। শিবদুর্গা বয়েজ ক্লাবের পুজোয় পাট দিয়ে তৈরি হয়েছে কাল্পনিক মন্দির। কিশোর সঙ্ঘের পুজোতেও উঠে আসছে নেপালের এক মন্দির। এখানে থাকছে বড় বড় বুদ্ধের মূর্তি। সবই ফাইবারের তৈরি। আর আছে বেশ কয়েকটি ড্রাগন। পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, শিশুদের মন টানতেই এই ব্যবস্থা।
শুধু থিমের চমক আর পুজোর আড়ম্বর নয়। পুজো উদ্যোক্তারা এই সময় বহু সামাজিক কাজ কর্মও করে থাকেন। যেমন মিতালি সঙ্গের তরফ থেকে পুজোর আগে ২০০ জন প্রতিবন্ধীকে সহায়ক সামগ্রী দান করা হয়েছে। তবে জাঁকজমকেও পিছিয়ে থাকতে চান না কেউ। পুজো কমিটিরগুলি শুক্রবার পুজো উদ্বোধনে হাজির করেছিল নেতা, মন্ত্রী থেকে রুপোলি পর্দার বহু তারাকে। পিছিয়ে নেই খোদ পুরসভাও। জানা গিয়েছে, পুজো পরিক্রমায় থাকবেন বেশ কিছু নামী অভিনেতা।
চার দিনের উৎসবে শহর তো বটেই পাশের জেলা থেকেও বহু মানুষ আসবেন। ভিড় সামলাতে প্রস্তুত প্রশাসনও। সে জন্য বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে পুলিশ। চুঁচুড়া ও বাঁশবেড়িয়া পুরসভার অধীনে শতাধিক পুজো হয়। এর মধ্যে চুঁচুড়ায় ২৫টি এবং বাঁশবেড়িয়ায় ৩৪টি পুজো অনুমতি। বাঁশবেড়িয়া পুরসভার তরফে বেশ কয়েকদিন আগেই রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে অতিরিক্ত আলো। শুক্রবার রাত থেকেই ভি়ড় শুরু হয়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে।