বেআইনি: এভাবেই চলে কাজ। নিজস্ব চিত্র
অটোয় রান্নার গ্যাস ব্যবহার বেআইনি। অথচ সেই রান্নার গ্যাস ব্যবহার করেই রমরমিয়ে চলছে অটো।
হুগলির চণ্ডীতলা ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে কয়েকশো অটো ও বেশ কিছু চার চাকার গাড়ি চলাচল করে। অভিযোগ, এদের অধিকাংশই জ্বালানি হিসাবে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করে। বেআইনি এই কাজের প্রতি প্রশাসনেরও কোনও নজরদারি নেই।
মশাট থেকে বারুইপাড়া, চণ্ডীতলা বাজার থেকে দিল্লি রোডের পাশাপাশি বিভিন্ন রাস্তাতেও চলে অটো। কয়েক বছর আগে নতুন কিছু রুটে অটোর পারমিট দিয়েছে জেলা পরিবহণ দফতর। ফলে অটোর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের বেআইনি কারবারও বেড়েছে। এক অটোচালকের বক্তব্য, অটোয় যে গ্যাস ব্যবহার হয় তা ভরতে যেতে হয় পেট্রোল পাম্পে। অথচ অটোর সংখ্যা বাড়লেও সেই অনুপাতে ওই গ্যাস ভরার পাম্প কম। ফলে ঝুঁকি আছে জেনেও বাধ্য হয়েই অনেকে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করছেন। এটা পাওয়াও সহজ। আর সেটা যে নেহাত মিথ্যা নয়, তার প্রমাণও মিলেছে। চণ্ডীতলা, মশাট প্রভৃতি জায়গায় রাস্তার উপরেই গড়ে উঠেছে অটোয় রান্নার গ্যাস ভরার গুমটি। এমনই একটি গুমটিতে গিয়ে দেখা গেল অটোয় গ্যাস ভরা চলছে। শুধু গুমটিই নয়, অনেক অটোচালকের বাড়িতেই রয়েছে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ভরার মেশিন।
একটা কাঠের পাটাতনের মাঝে গ্যাস ভরার মেশিন লাগানো থাকে। মেশিনের এক দিকে দুটি পাইপ লাগানো। তার একটি দিক সিলিন্ডারের মুখে অন্যদিকটি অটোর গ্যাসট্যাঙ্কে লাগানো হয়। মেশিনের এক অংশে লোহার রড দিয়ে পাম্প করে সিলিন্ডার থেকে অটোয় গ্যাস ভরা হয়। এই সময় কোনওরকম অসাবধানতায় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিলেন না গুমটির মালিক। গুমটি থেকে গ্যাস ভরে এক অটো চালক জানান, শুধু চণ্ডীতলা নয়, হুগলির শহর অঞ্চল ছাড়া গ্রামীণ এলাকার প্রায় কোথাও গ্যাস ভরার জন্য পেট্রোল পাম্প নেই। সব চেয়ে কাছে গ্যাস ভর্তির স্টেশন বলতে শ্রীরামপুর। যেখানে যেতে আসতেই দিন কাবার। তাই বাধ্য হয়েই রান্নার গ্যাসে অটো চালাতে হয়।
আর রান্নার গ্যাসের এমন অপব্যবহারের জন্যই তার কালোবাজারিও হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মশাট গ্রামের বাসিন্দা জহর দাসের অভিযোগ, মোবাইল ফোন গ্যাস বুকিং করার পর গ্যাস পেতে ১৫-১৬ দিন লেগে যাচ্ছে। তাঁর দাবি, রান্নার গ্যাসের এমন বেআইনি কারবারের জন্য গ্রাহকদের ভোগান্তি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন প্রশাসনের কর্তারা। হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অতুল ভি বলেন, ‘‘শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসকের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করে কী ভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় তা দেখব।’’