রক্তাক্ত: হাসপাতালের পথে। নিজস্ব চিত্র
বিদায়ী উপপ্রধানকে কোপানোর অভিযোগ উঠল হুগলির ধনেখালি এলাকায়। বুধবার বিকেলের ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত মৃত্যুঞ্জয় বেরা ধনেখালির গোপীনাথপুর ২ পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের টিকিটেই জিতেছেন তিনি।
এ দিন দুপুরে ধনেখালি বিডিও অফিসে বৈঠক সেরে মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। বিকেল সা়ড়ে ৩টে নাগাদ মাঝপথে কমরুল এলাকার একটি নির্জন মাঠে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই উদ্ধার করে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। জানা গিয়েছে বাঁশ, লাঠি জাতীয় কিছু দিয়ে মারা হয়েছে তাঁকে। ভেঙেছে দু’পা, বাঁ হাত, মাথায় আঘাত রয়েছে। ধারাল অস্ত্রের কোপও রয়েছে বাঁ হাতে।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতা আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু গাড়িতেই তাঁর শরীর আরও খারাপ হয়। মুখ দিয়ে রক্ত বের হওয়াতে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রাত পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও, গোটা ঘটনায় উঠে আসছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের তত্ত্বই। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার দাবি, মৃত্যুঞ্জয়ের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজন বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছিল। বিষয়টি মৃত্যুঞ্জয়ও প্রশাসনের কাছে জানিয়েছিলেন। এ দিন সকাল থেকেই কমরুল এলাকায় একটি ভাঙা বাড়িতে কিছু লোকজন জড়ো হতে দেখেছিলেন বলে দাবি ওই নেতার। তাঁর অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবেই মৃত্যুঞ্জয়ের উপর হামলা চালানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতে বিরোধীরা প্রার্থী দিতেই পারেনি। দলের কোন্দল নেই— এমনটাই দেখানো হয়েছিল বাইরে। রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যস্থতায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আসন সমঝোতা হয়েছিল। মৃত্যুঞ্জয়ের লোকেরা ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে পাঁচটি আসনে জয় পায়, সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনও। অন্যরা পায় গ্রাম পঞ্চায়েতে চারটি আসন।
কিন্তু ফল প্রকাশের পর থেকেই শুরু হয় উত্তেজনা। কোন গোষ্ঠী বোর্ড গড়বে তা নিয়ে চাপান উতোর চলছিলই। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, তারই জেরে আক্রান্ত হলেন মৃত্যুঞ্জয়।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের দলের কর্মীর উপর হামলা হয়েছে। পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বার করবে।’’