‘কাটমানি-পোস্টার’ তদন্তে কিছু সূত্র মিলেছে: সিপি

গাড়িতেই ছিলেন পুলিশ অফিসার, দাবি ধৃতের

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত অমিয় জানিয়েছে, গত সোমবার গভীর রাতে যখন ওই পোস্টার সাঁটানো হয়, তখন সমীরবাবু গাড়িতেই ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ০১:১৭
Share:

অভিযুক্ত: আদালতের পথে ধৃত অমিয় খামরুই। —নিজস্ব িচত্র

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি-পোস্টার’-এর তদন্তে ধৃত পুলিশের ভাড়াগাড়ির চালক অমিয় খামরুইয়ের সঙ্গে পুলিশ অফিসার সমীর সরকারকে মুখোমুখি বসিয়ে কথা বলতে চাইছেন চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা। আজ, শনিবার সেই আলোচনা হওয়ার কথা।

Advertisement

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত অমিয় জানিয়েছে, গত সোমবার গভীর রাতে যখন ওই পোস্টার সাঁটানো হয়, তখন সমীরবাবু গাড়িতেই ছিলেন। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিআইবি) সাব-ইনস্পেক্টর পদে কর্মরত রয়েছেন সমীরবাবু। দীর্ঘদিন ধরেই ওই বোলেরো গাড়িটি তিনি চাপেন। তাঁকে ইতিমধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরিয়েছে কমিশনারেট।

তবে, সমীরবাবু শুক্রবার দাবি করেছেন, ‘‘ওই চালক কোনও কারণে হয়তো আতঙ্কে এ সব কথা বলছেন। সে দিন গাড়িতে আমি ছিলাম না। তদন্তে তা প্রকাশ পাবেই।’’ আগেই সমীরবাবু দাবি করেছেন, ওই রাতে তাঁর এক পরিচিতকে ছাড়তে গাড়িটি শ্রীরামপুর স্টেশনে গিয়েছিল। সিসিটিভিতে গাড়ির ছবি আসতেই পারে। কমিশনারেটের কারণ দর্শানোর নোটিস পাওয়ার পরই তিনি শুক্রবার চুঁচুড়ায় আইনজীবীদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে যান বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

সোমবার গভীর রাতে ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটা ওই বোলেরো গাড়িতে চেপে কয়েক জন শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি স্টেশন-সহ বিভিন্ন জায়গায় সাংসদের নামে ওই পোস্টার লাগায় বলে অভিযোগ। তাতে লাল কালিতে সাংসদের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি অশ্লীল কথাও লেখা ছিল। এ নিয়ে শাসকদলের অন্দরে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। সিসিক্যামেরার ফুটেজ দেখে গাড়িটি চিহ্নিত করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় থেকে গাড়িটি আটক করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ওই গাড়ির চালক অমিয়কে।

শুক্রবার অমিয়কে শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ঘটনার নেপথ্যে অন্য মাথা রয়েছে কিনা, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘যে অফিসারকে শোকজ় করা হয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে হবে। তাঁর সঙ্গে কথা বলেও অনেকটাই পরিষ্কার হবে ওই ঘটনা। তদন্তে কিছু সূত্র মিলেছে।’’

কমিশনারেট সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে শ্রীরামপুর স্টেশন চত্বরের সিসিক্যামেরার ফুটেজ দেখে এক জনকে আটক করা হয়েছিল। তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ওই রাতে স্টেশনের শৌচালয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে কয়েক জনকে পোস্টার সাঁটতে তিনি দেখেছেন। গাড়ির ভিতরেও কেউ বসে ছিল।

দলীয় কোন্দলের জেরে ওই পোস্টার-কাণ্ড কিনা, সেই চিন্তায় শাসকদল খানিকটা উদ্বিগ্ন। সাংসদ কল্যাণবাবু এ দিন বলেন, ‘‘পুরোটাই পুলিশের তদন্ত সাপেক্ষ। পুলিশ নিশ্চয় গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement