চণ্ডীপুর গ্রামীণ হাসপাতালে পুলিশের সামনেই বিক্ষোভ রোগীর পরিবারের।-সুব্রত জানা।
রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়াল হাওড়ার উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের চণ্ডীপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর মুত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধরও করা হয়। তাঁকে বাঁচাতে গেলে এক সিভিক ভলান্টিয়ারও মার খান। খবর পেয়ে উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। মৃতের পরিবারের তরফে উলুবেড়িয়া থানায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুল চিকিৎসার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, ওই রোগী পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁকে প্রয়োজনীয় ওযুধ ও ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। ভুল চিকিৎসার কোনও প্রশ্নই নেই। প্রহৃত চিকিৎসক জিতেন্দ্র কুমারও পুলিশের কাছে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিককে ওই ঘটনার রির্পোট দিতে বলা হয়েছে। রির্পোট পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ১২টা নাগাদ উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ার অভিরামপুরের বাসিন্দা মনোরঞ্জন সামন্তকে (৫৫) অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের লোকজন চণ্ডীপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরিবারের দাবি, মনোরঞ্জনবাবুর বুকে ব্যথা হচ্ছিল। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের বলা হয়েছিল পেটে ব্যথা। সেই মতো কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে দুটি ইঞ্জেকশন দেন। হাসপাতালে কিছুক্ষণ রাখার পর চিকিৎসক মনোরঞ্জনবাবুকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। পরিবারের লোকজন মনোরঞ্জনবাবুকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরিবার সূত্রে খবর, কুলগাছিয়া স্টেশনের কাছে অটোয় ওঠার সময় মনোরঞ্জনবাবু অসুস্থতা বোধ করেন। একটু পরেই অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁকে বাড়িতে নিয়ে চলে যান তাঁরা। কিন্তু বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরে অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় তাঁকে ফের চণ্ডীপুর হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁরা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মনোরঞ্জনবাবুকে মৃত বলে জানান। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসকের ভুলের জন্যই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের বৌমা সবিতা দেবীর অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের ডাক্তারবাবু ভুল চিকিৎসা করেছেন। কারণ শ্বশুরমশাইয়ের বুকে ব্যথা হচ্ছে বলে আমরা চিকিৎসককে জানিয়েছিলাম। কিন্তু রোগীর মৃত্যুর পরে চিকিৎসককে চেপে ধরলে তিনি বলেন পেট ব্যাথার চিকিৎসা করেছেন। ডাক্তারবাবু ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়াতেই শ্বশুরমাশাই মারা গিয়েছেন।’’
মনোরঞ্জনবাবুর মৃত্যুর খবর শুনেই পরিবারের লোকজন হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসককে ঘেরাও করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তাঁকে মারধর করা হয়। নার্স ও অন্যান্য কর্মীদেরও নিগ্রহ করা হয়। চিকিৎসককে বাঁচাতে গেলে ঘটনাস্থলে থাকা এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।