বাগনানে কিসান মান্ডির কাজ এখনও অসমাপ্ত। —নিজস্ব চিত্র।
বাগনান ১-এর পরে পরে শ্যামপুর ২ ব্লকেও কিসান মান্ডি তৈরির কাজে যুক্ত ঠিকা সংস্থাকে বাতিল করে দিল রাজ্য কৃষি বিপণন দফতর। ফলে সেই কাজ ফের কবে শুরু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ঠিকা সংস্থা বাতিল হওয়া ইস্তক হাওড়ার বাগনান ১ ব্লকে কিসান মান্ডি তৈরির কাজ বন্ধই রয়েছে। সেখানে ঠিকা সংস্থাকে বাতিল করা হয়েছিল দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায়। শ্যামপুরে আবার নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারার অভিযোগে ঠিকা সংস্থাকে বাতিল করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই ২০১২ সালে প্রথম পর্যায়ে রাজ্যে ৯৫টি কিসান মান্ডি তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল কৃষি বিপণন দফতর। এই পর্যায়ে হাওড়ার ১৪টি ব্লকের মধ্যে ৫টিতে মান্ডি তৈরির পরিকল্পনা হয়। কোন প্রকল্প কবে শেষ হবে, তা জানিয়ে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার চালু করেন। সেই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৫টি মান্ডির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময়সীমা মেনে কোনওটিরই কাজ শেষ হয়নি। উলুবেড়িয়া ১, উদয়নারায়ণপুর ও আমতা ১ ব্লকে মান্ডির কাজ শেষ হয়েছে কয়েক মাস আগে। ঠিকা সংস্থাগুলি বাতিল হয়ে যাওয়ায় বাকি দু’টি অর্থাৎ শ্যামপুর এবং বাগনানে কাজ থমকে গিয়েছে।
বাগনানে কিসান মান্ডি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল গত বছর মার্চে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা নির্মাণ কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় পরিদর্শনে এসে ঠিকা সংস্থাকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। পরে তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে কৃষি বিপণন দফতরের কর্তাদের দাবি। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তবে ঠিকা সংস্থা নিজেদের সপক্ষে যেসব যুক্তি দেয়, তা ধোপে টেকেনি বলে দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন। এখন নতুন ঠিকা সংস্থা নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে। যদিও কবে থেকে ফের মান্ডি তৈরির কাজ শুরু হবে তা দফতরের কেউই বলতে পারেননি।
শ্যামপুর ২ ব্লকেও মান্ডি তৈরির কাজে যুক্ত ঠিকা সংস্থার বিরুদ্ধে আবার ধীর গতিতে কাজ করার অভিযোগ ওঠে। ২০১২-র সেপ্টেম্বরে কাজ শুরু হয়েছিল। প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার মানলে ১৮ মাসের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু দীর্ঘ সময় চলে গেলেও কাজের অগ্রগতি হয়নি। ঠিকা সংস্থার পক্ষ থেকে অবশ্য কৃষি বিপণন দফতরকে জানানো হয়েছিল, একটি রাস্তার সমস্যা থাকায় কাজ শুরু করতে তাদের দেরি হয়েছে।
কৃষি বিপনন দফতর সূত্রের দাবি, রাস্তার সমস্যা হলেও তা পরে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সংস্থার কর্তাদের একাধিক বার ডেকে সতর্কও করা হয়। কিন্তু তাতেও সংস্থাটি কাজের গতি বাড়াতে পারেনি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার সময়সীমা থাকলেও তার মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ কাজ হয়েছিল। এর পরেও তাদের সুয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু কাজ ঠিক মতো না এগোনোয় শেষ পর্যন্ত ঠিকা সংস্থাটিকে বাতিল করা হয়েছে বলে কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। চেষ্টা করেও ওই ঠিকা সংস্থার কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
তবে কৃষি বিপননমন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘বাগনান ১ এবং শ্যামপুর ২ ব্লকের কিসান মান্ডি তৈরির জন্য ফের টেন্ডার ডেকে ঠিকা সংস্থা নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে। শীঘ্র কাজ শুরু হবে।’’