হাসপাতালে মৃত্যুর ঘটনায় অবরোধ মুম্বই রোডে।—নিজস্ব চিত্র।
রাস্তায় বসে মদ খাওয়ার অপরাধে পুলিশের হাতে ধৃত এক যুবকের উলুবেড়িয়া হাসপাতালে মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার উত্তেজনা ছড়াল। এ দিন এখানে মারা যান শম্ভূনাথ অধিকারী (৩৫) নামে ওই যুবক। তাঁর বাড়ি উলুবেড়িয়ারই কানসোনা গ্রামে। গত শুক্রবার রাতে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। অসুস্থ থাকার জন্য তাঁকে শনিবার উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শম্ভূর পরিবারের অভিযোগ লকআপে মারধর করার জন্যই তাঁর মৃত্যু হয়েছে
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবরে, গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ চার-পাঁচজন সঙ্গীর সঙ্গে নিজের বাড়ির কাছে রাস্তার ধারে বসে মদ্যপান করছিলেন পেশায় রাজমিস্ত্রি শম্ভূ। টহলদারি পুলিশ সকলকেই গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। পর দিন আদালতে পেশ করার আগে নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য ধৃতদের উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল নিয়ে আসে পুলিশ। সেখানে অন্যদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও অসুস্থ থাকায় শম্ভূকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়।
সোমবার দুপুর ৩টে নাগাদ শম্ভূ মারা যান। মৃত্যুর খবর পেয়েই তাঁর পরিবারের লোকজন হাসপাতালে চলে আসেন। পুলিশ পাহারায় দেহটি হাসপাতাল কর্মীরা ময়না-তদন্তের জন্য আনার সময়ে শম্ভূর পরিবারের লোকজন বাধা দেন। পুলিশকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। কোনওমতে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ। সন্ধ্যায় শম্ভূর পরিবারের লোকজন স্টেশন রোডের মোড়ে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। এর ফলে ওটি রোড এবং স্টেশন রোডে যানজট দেখা দেয়। শম্ভূর স্ত্রী মমতাদেবীর অভিযোগে, ‘‘পুলিশ লকআপে স্বামীকে মারধর করেছে। তাই সে মারা গিয়েছে। হাসপাতালেও ঠিকমতো চিকিৎসা হয়নি।’’ হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘ময়না তদন্ত ছাড়াও একজন কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল করা হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। মৃতের পরিবারের লোকজন লিখিত অভিযোগ করলে তার তদন্ত হবে।’’
হাসপাতালের সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার বলেন, ‘‘নিয়মিত মদ্যপান করতেন ওই যুবক। অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্যই তাঁর শরীরের অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। সেই কারণেই তাঁর চিকিৎসা করানো হচ্ছিল। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলেই তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’’