চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর দু’বছরের বেশি কেটে গিয়েছে। কিন্তু চালু হয়নি পেনশন। উপরন্তু জুটেছে দুর্ব্যবহার। পেনশন চাইতে গিয়ে অপমানিত হওয়ার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তি মারাও গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এর পর হাওড়া জেলা কালেক্টরেট দফতরে গত শুক্রবার থেকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে পেনশনপ্রাপকদের একটি সংগঠন।
জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি শুনেছি। দুর্ব্যবহারের অভিযোগও কানে এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসন ও কর্মী সংগঠনগুলি সূত্রে খবর, ২০১২ সালের শেষে ও ২০১৩ সালে শুরুতে জেলাশাসকের দফতরে কর্মরত ছয় জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী অবসর নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের পেনশন এখনও চালু হয়নি। সেই ছয় জনের মধ্যে দু’জন মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে একটি মৃত্যুর পিছনে সরাসরি আর্থিক অনটন ও দুশ্চিন্তাকে দায়ী করছেন কর্মীদের একাংশ। জেলাশাসকের দফতরের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত কর্মী লিলুয়ার বাসিন্দা কাশীনাথ সাহার অভিযোগ, বাগনানের বাসিন্দা শীতল ভৌমিক পেনশনের বিষয়ে খোঁজ নিতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলাশাসকের অফিসে যান। তখন ওই দফতরের নাজারত বিভাগের এক উচ্চপদস্থ কর্তা তাঁকে অপমান করেন। এর কয়েক দিনের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান শীতলবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘শেষ দিকে দৈনন্দিন সংসার চালানোর খরচটুকুও ছিল ন শীতলবাবুর কাছে।’’
এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশন ও স্টেট গভর্নমেন্ট পেনশর্নাস অ্যাসোসিয়েশন আন্দোলন শুরু করেছে। কো-অর্ডিনেশন কমিটির কয়েকজন সদস্যও এই বিষয়ে সরব হয়েছেন। রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের হাওড়া জেলা ইউনিটের নেতা রঞ্জিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জেলায় আসার কারণে জেলাশাসক আমাদের কয়েকদিন বিক্ষোভ না দেখানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তাই আমরা দু’দিন আন্দোলন বন্ধ রেখেছিলাম। বুধবার থেকে ফের ‘টিফিন টাইমে’ আন্দোলন শুরু হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ওই কর্মীদের একটি বেতন বৃদ্ধিতে অর্থ দফতরের অনুমোদন ছিল না। তাই সমস্যা তৈরি হয়েছে। পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে জেলাশাসক বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার সময় দিয়েছেন। কিন্তু দুর্ব্যবহার জুটছে কেন তা নিয়ে কোনও উচ্চবাক্য করেননি তিনি।