ভোটে ভরাডুবির পর অভিযোগ-বাক্স চুঁচুড়ার বিধায়কের

সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ বা পরামর্শ শুনতে দলীয় কার্যালয়ে চিঠির বাক্স রাখার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। সোমবার খাদিনা মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে অভিযোগ ও পরামর্শ-বাক্সটি লাগানো হয়।

Advertisement

প্রকাশ পাল 

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৯ ০৩:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভোটে ভরাডুবি হয়েছে। দলীয় নেতৃত্বের সমালোচনা হজম করতে হয়েছে। এখন আত্মসমালোচনার রাস্তা খুঁজতে শুরু করেছেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার।

Advertisement

সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ বা পরামর্শ শুনতে দলীয় কার্যালয়ে চিঠির বাক্স রাখার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। সোমবার খাদিনা মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে অভিযোগ ও পরামর্শ-বাক্সটি লাগানো হয়। বিধায়ক বলছেন, তাঁর বিধানসভা এলাকার যে কেউ ওই বাক্সে অভিযোগ বা মতামত জানাতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘‘বাক্সের চাবি আমার কাছে থাকবে। রোজ সন্ধ্যায় বাক্স খুলে চিঠি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। আমার বিরুদ্ধেও যদি অভিযোগ পাই, প্রয়োজনে অভিযোগকারীর বাড়িতে গিয়ে কথা বলব। ভুল হলে সংশোধন করতেই হবে। সে জন্য মানুষের ক্ষোভের কথা বেশি করে জানা দরকার।’’ বিধায়ক জানান, অনেকে জনসমক্ষে অভিযোগ জানাতে পারেন না। তাই এই ব্যবস্থা।

হুগলি লোকসভা কেন্দ্রটি তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। চুঁচুড়া বিধানসভায় তৃণমূল একুশ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়ে। র কেউ কেউ মনে করছেন, তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ। অভিযোগ জমা পড়লেও কতটা ব্যবস্থা তাঁদের বিরুদ্ধে নেওয়া যাবে, তা নিয়ে তাঁদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। চুঁচুড়ার বাসিন্দা এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘বিধায়কের নামেও তো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই প্রশাসনিক সভায় দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন।’’ তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, আগামী বছর পুর-নির্বাচন। তার পরের বছর বিধানসভা ভোট। সেই কারণেই মরিয়া হয়ে সংগঠনের ফাঁকফোকর বন্ধ করতে বিধায়ক চেষ্টা করছেন।

Advertisement

অন্য তৃণমূল বিধায়করাও কি একই রাস্তা নেবেন?

প্রশ্ন শুনে বলাগড়ের (এখানেও লোকসভা ভোটে বিজেপি থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল) বিধায়ক অসীম মাঝি বলেন, ‘‘অভিযোগ বাক্সের ভাবনাটা খুব ভাল। আমিও চেষ্টা করব।’’

সপ্তগ্রামেও তৃণমূলকে ভাল ব্যবধানে পিছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। এই কেন্দ্রের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তের কথায়, ‘‘অসিতবাবু নিজের মতো করে চেষ্টা করছেন। প্রতিদিন বহু সাধারণ মানুষ আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। দরকারে আলাদা কথা বলি। পরিষেবা দেওয়া থেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি।’’ একই বক্তব্য উত্তরপাড়ার বিধায়ক তথা দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রবীর ঘোষালের। তাঁর দাবি, ‘‘মানুষের জন্য আমার বিধায়ক কার্যালয়ের দ্বার অবারিত। তবে অসিতবাবুর উদ্যোগ নিশ্চয়ই ভাল।’’ গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার বলেন, ‘‘মানুষের সঙ্গে বছরভর সংযোগ রাখি। ভোটের ফল আশানুরূপ না হওয়ার নানা কারণ রয়েছে। তবে দলের নির্দেশ অনুযায়ী মানুষের বাড়ি বাড়ি যাব। তবে অভিযোগ-বাক্স বসানোর কথা এখনই ভাবছি না।’’

ভোটের ফল এবং দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ভর্ৎসিত হতে হয়েছে ধনেখালির বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অসীমা পাত্রকে। অসিতবাবুর উদ্যোগ প্রসঙ্গে তাঁর ভাবনা নিয়ে তাঁর মতামত জানতে চাওয়া হলে, অসীমা বলেন, ‘‘যে যাঁর মতো করছেন। আমরা কী ভাবে আত্মসমালোচনা করব, তা সংবাদমাধ্যমকে বলতে যাব কেন?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement