ঠা-ঠা করছে রোদ। হাওয়ায় লু-বইছে। তবু ভিড় জমেছিল খড়্গপুর তালবাগিচার রথতলা ময়দানে। বুধবার দুপুরে তৃণমূলের নির্বাচনী সভা। জমায়েত প্রায় তিন হাজার মানুষের ২০ভাগ তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক হলেও বাকিরা সাধারণ বাসিন্দা। সিংহভাগই মহিলা। তাঁদের আবার অধিকাংশই ভোটার তালিকাভুক্ত নন। কারণ? বয়স আঠারো পেরোয়নি যে!
তাতে কী? দেব-কে দেখতেই তো ভিড় জমছে গরম উপেক্ষা করে। কথা মতো সভায় এসেছিলেন তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী। মঞ্চে সংবর্ধনায় পাওয়া পুষ্পস্তবক তাঁদের দিকে ছুড়ে দিয়েছেন। উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছে মাঠ। বেশিক্ষণ নয়। উদ্দেশ্য যে রাজনৈতিক। তাই মাইক ধরেই বক্তব্য রাখতে শুরু করেন মুকুল রায়। তিনি বলেন, “খড়্গপুরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কংগ্রেসের জ্ঞানসিংহ সোহন পালকে জয়ী করে বিধানসভায় পাঠিয়েছেন। তিনি প্রবীণ মানুষ। অনেকেই তখন বিশ্বাস করেনি জাতীয় কংগ্রেস আসলে সিপিএমের সঙ্গে মিলেমিশে রয়েছে। এখন মুখোশ খুলেছে।” এর পরে জোটের সমালোচনা চলেছে জোরদার। চটাপট হাততালি দিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। এবার জোট ছে়ড়ে মুকুলবাবু সূর্যকান্ত মিশ্রকে কটাক্ষ করতে শুরু করেন। আর সে মুহূর্তেই কোথা থেকে একটি পোকা ঢুকে পড়ে তাঁর পোশাকে। অস্বস্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে তড়িঘড়ি বক্তৃতা শেষ করে মঞ্চ ছাড়েন মুকুল রায়। এর পর মাইক হাতে নেন সুপারস্টার। অন্য দিনের মতো কিছু অরাজনৈতিক কথা দিয়ে শুরু করলেও, এ দিন দেবের বক্তৃতায় ভোটের উত্তাপ ধরা পড়েছে।
তিনি বলেন, “অনেক দল আছে যাঁরা মাইক ধরে নেমে পড়েছে শুধুমাত্র ১১তারিখের জন্য। কিন্তু আমার দলটা মাইক নিয়ে কথায় বিশ্বাস করে না। আমরা কাজে বিশ্বাসী। কাজ দেখিয়েই আমরা ভোট চাইতে এসেছি।” এর আগে গড়বেতাতেও একটি সভা করেন মুকুল রায় ও দেব। দলীয় প্রার্থী আশিস চক্রবর্তীর সমর্থনে আমলাগোড়ার সভাতেও মুকুল রায় তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের কথা শোনান। হাসাপাতালে চিকিৎসক থাকে না এই অভিযোগের উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, “চিকিৎসক কী দোকানে পাওয়া যায়। যে কিনে নিয়ে আসবেন। সমস্যা মেটাতে মেডিক্যালে আসন বাড়িয়েছে আমাদেরই সরকার।”
গড়বেতাতেই সভা করেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহমম্দ সেলিমও। ভিডিও হলের মাঠে দলীয় কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রথমেই জানিয়ে দেন, ‘‘এ বার এক নতুন পরিস্থিতিতে ভোট হচ্ছে। আক্রান্ত মানুষ কাছাকাছি আসে। জোট বাঁধে।” তাই বাম-কংগ্রেস জোট বেঁধেই লড়াই করছে। সেলিমের অভিযোগ, উন্নয়নের নামে শুধু কিছু বাড়ি তৈরি করা হয়েছে।