প্রতীকী ছবি।
পাঁচ দিনের ব্যবধানে ফের অপহরণ হুগলিতে। এ বার চাঁপদানিতে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে এক ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা।
গত রবিবার বাড়ির সামনে থেকে চুঁচুড়ার রায়বেড়ের এক যুবককে অপহরণের অভিযোগ ওঠে সমাজবিরোধী বিশাল দাসের বিরুদ্ধে। এর কিনারা না হতেই সামনে এল চাঁপদানির ঘটনা। শুক্রবার রাতে স্থানীয় দুষ্কৃতী চেংরুয়া এবং তার দলবল মহম্মদ ইকবাল নামে ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বলে অভিযোগ।
পর পর দু’টি ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। নাগরিক সুরক্ষায় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, চাঁপদানির ঘটনায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার এবং দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে, কী কারণে ওই ঘটনা, তা পরিষ্কার নয় বলে পুলিশের দাবি। তোলা চেয়ে না পাওয়ায় দুষ্কৃতীরা ওই কাণ্ড ঘটাতে পারে বলে কমিশনারেটের একটি সূত্রের অনুমান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর চৌত্রিশের ইকবাল চাঁপদানির নুরি লেনে থাকেন। বাড়ি লাগোয়া তাঁর মুদিখানা দোকান রয়েছে। শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ দোকান বন্ধের পরে তিনি ওই এলাকাতেই আরবিএস রোডে কাকা সাহেব হোসেনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেখানে একটি গাড়িতে দলবল নিয়ে অপেক্ষা করছিল চেংরুয়া। রাত ১০টা নাগাদ তারা হুড়মুড়িয়ে সাহেবের বাড়িতে ঢোকে। ইকবালকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়। সাহেবদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন বেরিয়ে এসে দুষ্কৃতীদের গাড়ির পিছনে ধাওয়া করেন। কিন্তু নাগাল পাননি।
সাহেবের অভিযোগ, ‘‘একদল দুষ্কতী হঠাৎ বাড়িতে ঢুকে ভাইপোকে তুলে নিয়ে গেল। ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনেক বললাম। ওরা শুনল না। আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কী কারণে ভাইপোকে নিয়ে গেল, বুঝতে পারছি না। ব্যবসা ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে ভাইপো থাকত না। ওর কোনও শত্রু আছে বলেও জানা নেই।’’
ইকবালের আত্মীয়দের অভিযোগ, মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে দুষ্কৃতীরা ইকবালের থেকে সেটি কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেয়। রাতে তাঁরা চাঁপদানি ফাঁড়িতে বিষয়টি জানান। শনিবার ভদ্রেশ্বর থানায় চেংরুয়া এবং তার দলবলের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, চেংরুয়ার বিরুদ্ধে ডাকাতি, ছিনতাই, তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের তাড়ায় সে পালিয়েছিল। সম্প্রতি এলাকায় ফেরে।
আতঙ্কিত এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘হুগলি শিল্পাঞ্চলে এক সময় দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত লেগেই ছিল। কিছুদিন সেই দৌরাত্ম্যের কথা তেমন শোনা যায়নি। কিন্তু যে কায়দায় দুই শহরে কুখ্যাত দুষ্কৃতীরা সাধারণ দুই যুবককে তুলে নিয়ে গেল বলে শুনছি, তাতে তো ভয় করছে।’’
গত রবিবার অপহৃত চুঁচুড়ার রায়বেড়ের যুবক বিষ্ণু মালের সন্ধান এখনও পায়নি পুলিশ। দুষ্কৃতীদের নাগালও পায়নি। পুলিশের দাবি, ওই যুবককে উদ্ধার এবং দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের চেষ্টা জারি রয়েছে।