বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে আট মাস ধরে নিখোঁজ

তিন বন্ধু ফিরে এসেছেন। কিন্তু বছর ত্রিশের অসিত এখনও নিখোঁজ।

Advertisement

তাপস ঘোষ

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৯
Share:

আর্তি: স্বামীর ছবি নিেয় পূর্ণিমা। —নিজস্ব চিত্র।

আট মাস আগে তিন বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার নাম করে বেরিয়েছিলেন ব্যান্ডেলের দেবানন্দপুরের অসিত মালিক। তার কিছুদিন পরে তিন বন্ধু ফিরে এসেছেন। কিন্তু বছর ত্রিশের অসিত এখনও নিখোঁজ। তাঁর পরিবারের লোকজনের অসিতের ছবি নিয়ে নানা জায়গায় ঘুরছেন। তাঁদের আশঙ্কা, তিন বন্ধু কোনও কারণে অসিতকে খুন করে দেহ কোথাও সরিয়ে দিয়েছে। অসিতের পরিবারের পক্ষ থেকে শুধু নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে।

Advertisement

ইতিমধ্যে পুলিশ অসিতের তিন বন্ধুকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। পুলিশ জানায়, ওই তিন জনের দাবি, তাঁরা সিকিম বেড়াতে গিয়েছিলেন। একদিন দুপুরে অসিত সেখানেই নিখোঁজ হয়ে যান। যদিও সিকিম বেড়াতে যাওয়ার স্বপক্ষে তাঁরা কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার জানান, সব রকম ভাবে ওই নিখোঁজের সন্ধান চলছে।

অসিতের বাবা গোপালবাবু বলেন, ‘‘ছেলে ট্রাকের খালাসির কাজ করত। খুবই অভাবের সংসার। বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে ও কী ভাবে নিখোঁজ হল, বুঝতে পারছি না। যাঁদের সঙ্গে গেল, তাঁরা এখন আমাদের দেখলেই রেগে যাচ্ছে। এর কারণও বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

পুলিশ এবং ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অসিতের ওই তিন বন্ধুও দেবানন্দপুরের বাসিন্দা। গত বছর ১৭ জুন বেলা ১১টা নাগাদ তাঁরা অসিতের বাড়িতে যান। পান্ডুয়া বেড়াতে যাওয়ার নাম করে অসিত তাঁদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন। ওই রাতে অসিত না-ফেরায় চিন্তায় পড়ে যান তাঁর বাবা এবং স্ত্রী পূর্ণিমা। তাঁরা পড়শিদের ঘটনার কথা জানান। কয়েক দিন পরে অসিতের এক বন্ধু গোপালবাবুকে ফোন করে জানান, তাঁরা সিকিমে এসেছেন। কিন্তু বেড়াতে বেরিয়ে অসিত নিখোঁজ হয়ে যান। ২৭ জুন সকালে অসিতের তিন বন্ধু ফিরে আসেন।

গোপালবাবু জানান, ওরা যাওয়ার কয়েকদিন পরে ছেলের এক বন্ধু নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে অসিতকে খোঁজাখুঁজির জন্য ৫০ হাজার টাকা চান। অত টাকা দিতে না-পারলেও তিনি ওই অ্যাকাউন্টে দু’হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু ছেলের খোঁজ মেলেনি। তিন বন্ধু ফিরে আসার পরেও অসিতের খোঁজ পেতে গোপালবাবুরা তাঁদের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। এর পরে ফের গোপালবাবুরা অসিত নিখোঁজ হওয়ার পিছনে তিন বন্ধুর যোগ রয়েছে বলে থানায় ডায়েরি করেন।

পূর্ণিমা বলেন, ‘‘মনে হয় স্বামীর তিন বন্ধু কোনও কিছু লুকোতে চাইছেন। ওঁরাই জোর করে স্বামীকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন। পুলিশ তদন্ত করুক।’’ রঞ্জিত মালিক নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘এতদিন হয়ে গেল, কেউ ছেলেটার কোনও খোঁজ দিতে পারছে না। যাঁদের সঙ্গে গেল, তাঁরাও এখন চুপচাপ!’’ তিন বন্ধুর কেউই এখন নিয়মিত গ্রামে থাকেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement