বর্ণময়: হাওড়ার বালি ঘোষপাড়ার পুকুরে সেই হাঁস। নিজস্ব চিত্র
করোনার জেরে দেশান্তরী হওয়া মানা। কিন্তু তারই মাঝে হাওড়ার বালি ঘোষপাড়ায় হাজির ভিন্ মহাদেশের এক ‘নাগরিক’। রংচঙে চেহারা নিয়ে বালি ঘোষপাড়ার বাগপুকুরে গত ক’দিন ধরে আস্তানা গেড়েছে সে। বিভুঁইয়ে এসে মানিয়ে নিতেও অসুবিধা হচ্ছে না তার।
এই বিদেশি আদতে একটি হাঁস। খাতায়কলমে যার নাম ‘ক্যারোলিনা ডাক’ বা ‘উড ডাক’। উত্তর আমেরিকার বাসিন্দা এই হংসের ভারতে পরিযানের কথা জানা নেই পক্ষীপ্রেমীদের। কী ভাবে সে এই বঙ্গভূমিতে এল, বুঝতে পারছেন না বন দফতরের অফিসারেরাও। তবে প্রকৃতিতে যে ভাবে সে রয়েছে, তাতে খাঁচাবন্দি করতেও নারাজ বন বিভাগ। হাওড়ার ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার রাজু সরকার বলছেন, ‘‘হাঁসটি প্রাকৃতিক পরিবেশে সুস্থ ও চনমনে আছে। অযথা খাঁচাবন্দি করার দরকার নেই।’’ হাঁসটিকে দেখতে বাগপুকুরে জড়ো হচ্ছেন পক্ষীপ্রেমীরা। ক্যামেরার সামনে ‘পোজ়’ও দিচ্ছে সে।
বাগপুকুরের বিশাল জলাশয়ে নানাবিধ জলচর পাখিদের বাস। সেখানেই সম্প্রতি নজরে পড়ে রংচঙে মাথা ও ঠোঁটওয়ালা হাঁসটিকে। আশপাশের ‘বাঙালি’ পাখিদের থেকে তাকে সহজেই আলাদা করা যাচ্ছিল। খবর যায় পক্ষীপ্রেমীদের কাছে। সোমবার ওই হাঁসের খোঁজে গিয়েছিলেন পক্ষীপ্রেমী চিকিৎসক মলয় মণ্ডলও।
এই হাঁসেরা মূলত উত্তর আমেরিকার বাসিন্দা। শীতকালে অবশ্য মার্কিন মুলুকের দক্ষিণ ভাগে চলে আসে তারা। সেই পাখি কী ভাবে এত দূরে এল? পক্ষী বিশারদ শুভঙ্কর পাত্রের বক্তব্য, ‘‘অনেকে বলছেন, কাছেপিঠে কেউ এই হাঁস পুষতেন। পালিয়ে এসেছে। কিন্তু পাখিটির চেহারা দেখে মনে হচ্ছে না সেটি বন্দি অবস্থায় ছিল।’’ বন দফতরও চাইছে, হংসরাজ আপাতত প্রকৃতির মাঝেই থাকুক। তবে কেউ যাতে পাখিটিকে বিরক্ত না করেন, সে ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন করা হয়েছে এলাকার লোকজনকে। বনকর্মীদের একটি দলও নিয়মিত নজর রাখছে।