উলুবেড়িয়ায় গ্রেফতার দম্পতি

লজেন্সের বায়না করায় ৮ বছরের বালিকাকে মেরে পুঁতে ফেলল প্রতিবেশী

লজেন্স খাওয়ার জন্য বায়না ধরেছিল বছর আটেকের মেয়েটি। তা জোটেনি। উল্টে ঘ্যানঘ্যান করার ‘অপরাধে’ মেয়েটির গালে উড়ে এসেছিল সপাটে চড়। কানের পাশে লাগা সেই আচমকা চড়ে মারা য়ায় মেয়েটি। বেগতিক দেখে দেহটি পুঁতে ফেলা হয় বাড়ির পাশেই খড়িবনে। ঘটনার প্রায় এক মাস পরে, বৃহস্পতিবার বিকেলে, উলুবেড়িয়ার বাহাদুরপুরের বাসিন্দা রেজিনা খাতুন নামে ওই বালিকার পচা-গলা দেহ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:৫৩
Share:

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পিসি। ইনসেটে, রেজিনা। ছবি: সুব্রত জানা।

লজেন্স খাওয়ার জন্য বায়না ধরেছিল বছর আটেকের মেয়েটি। তা জোটেনি। উল্টে ঘ্যানঘ্যান করার ‘অপরাধে’ মেয়েটির গালে উড়ে এসেছিল সপাটে চড়। কানের পাশে লাগা সেই আচমকা চড়ে মারা য়ায় মেয়েটি। বেগতিক দেখে দেহটি পুঁতে ফেলা হয় বাড়ির পাশেই খড়িবনে।
ঘটনার প্রায় এক মাস পরে, বৃহস্পতিবার বিকেলে, উলুবেড়িয়ার বাহাদুরপুরের বাসিন্দা রেজিনা খাতুন নামে ওই বালিকার পচা-গলা দেহ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করল পুলিশ। মোসলেম খাঁ নামে মধ্য-চল্লিশের ওই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে মোসলেমের স্ত্রী আজমিরাকেও।
২৫ অগস্ট রাতে রেজিনার বাবা বাপি শেখের কাছে মাছ ধরার সরঞ্জাম নিতে এসেছিল প্রতিবেশী মোসলেম। পড়শিকাকুর সঙ্গে মাছ ধরতে যাওয়ার বায়না ধরে রেজিনা। ‘চল’ বলে তাকে নিয়েই সেই বৃষ্টি-রাতেই জমির আলে মাছ ধরার জন্য ঘুনি বসাতে গিয়েছিল মোসলেন। মেয়ের খোঁজে মোসলেমের বাড়ি গিয়ে বাপি দেখেছিলেন, মোসলেম বা রেজিনা কেউই ফেরেনি তখনও। সে রাতে মেয়ে না ফেরায় পরের দিনই পুলিশের কাছে মোসলেম এবং আজমিরার বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ করেন বাপি। পুলিশের দাবি, আজমিরাকে জেরা করে সে সময়ে কিছুই জানা যায়নি। ২০ সেপ্টেম্বর হাওড়া-খড়্গপুর শাখার ফুলেশ্বর স্টেশনে মোসলেমকে দেখতে পান বাহাদুরপুর গ্রামের জনা কয়েক বাসিন্দা। তাঁরাই মোসলেমকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরের দিন উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতে তাকে তোলা হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, বৃহস্পতিবার পুলিশের জেরায় মোসলেম স্বীকার করে, রেজিনাকে খুন সেই করেছে। কোথায় দেহটি পুঁতে রেখেছে তাও দেখিয়ে দেয় সে।
কেন ওই একরত্তি মেয়েটাকে খুন করতে গেল সে? পুলিশের দাবি, জেরায় মোসলেম জানিয়েছে, তার বাড়িতে মাঝে মাঝে যেত রেজিনা। তাকে সে লজেন্স দিত। ওই দিনও জমির আলে ঘুনি বসিয়ে বাড়ি ফেরার পরে তার কাছে বারবার লজেন্সের জন্য বায়না করতে থাকে সে। কিন্তু তার কাছে লজেন্স ছিল না। রেগে গিয়ে মেয়েটির গালে সপাটে চড় মারে মোসলেম। তাতেই মারা যায় রেজিনা। ভয় পেয়ে দেহটা খড়িবনে পুঁতে রেখে চম্পট দেয় মোসলেম। পুলিশের দাবি, পুরো ঘটনাটি জানত মোসলেমের স্ত্রী। পুলিশকে সে কিছু জানায়নি।
রেজিনার পরিবারের অবশ্য দাবি, মোসলেম রেজিনার উপরে অত্যাচার করে তাকে খুন করেছে। রেজিনার ঠাকুমা সোলেহার বেগম বলেন, ‘‘কুমতলবেই নাতনিকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল মোসলেম। তার পরে তাকে খুন করে।’’ এ দিন রেজিনার দেহ উদ্ধারের পরে পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।

Advertisement

জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘মোসলেম রেজিনাকে খুনের কথা স্বীকার করেছে। খুনের কারণ জানতে তাকে জেরা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement