গাদিয়াড়ায় হুগলি নদীর বাঁধে ফাটল। ছবি: সুব্রত জানা
ব্যবধান মাত্র চার দিনের। রবিবার ফের শ্যামপুরের গাদিয়াড়ার খেজুরতলায় হুগলি নদীর বাঁধে ধস নামল। যার ফলে, শ্যামপুরের বিস্তীর্ণ অংশে প্লাবনের আশঙ্কা আরও তীব্র হল।
চার দিন আগে ধস নেমেছিল বাঁধের প্রায় ৪০ ফুট অংশে। রবিবার দ্বিতীয় বার যেখানে ধস নামে, সে জায়গাটি কিছুটা দূরে। এ বার বাঁধের প্রায় ২০০ ফুট নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। এ ভাবে চলতে থাকলে এই বর্ষার মরসুমে বড় বিপদের আশঙ্কা করছেন অনেকে। সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা তড়িঘড়ি কাজে নামলেও জানিয়ে দিয়েছেন, বাঁধ মেরামত করা যাচ্ছে না। কারণ, যতবার বালির বস্তা ফেলা হয়, তা তলিয়ে যায়। তাই সমস্যা মেটাতে ধসের সমাম্তরালে প্রায় ৯০০ ফুট নতুন বাঁধ তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে সেচ দফতর।
সেচ দফতরের নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি (২)-এর নির্বাহী বাস্তুকার রঘুনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ধস মেরামত সম্ভব নয়। তাই আমরা এই বাঁধের সমান্তরাল নতুন বাঁধ বাঁধছি। আশা করছি, পূর্ণিমার ভরা কটালের আগেই বাঁধ তৈরির কাজ শেষ করতে পারব।’’ বাঁধ কী ভাবে পাকাপাকি ভাবে মেরামত করা যায়, তা সরেজমিন পরিদর্শন করতে আজ, মঙ্গলবার ওই এলাকায় যাচ্ছেন সেচ দফতরের বিশেষজ্ঞ এবং রাজ্য স্তরের পদস্থ আধিকারিকেরা। যেখানে ধস নেমেছে, সেই এলাকাটি রূপনারায়ণ, হুগলি এবং দামোদরের সঙ্গমস্থল। এখান থেকে আবার হুগলি নদী বাঁক নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে গিয়েছে। ফলে, জোয়ারের জল এসে এখানে বাঁধে ধাক্কা মারে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই এলাকায় প্রায় ৫০০ ফুট নদীবাঁধ বেশ নীচু। তাই তাঁরা বাঁধ পাকা করার দাবি তুলেছিলেন আগেই। এলাকাটি পড়ছে বাণেশ্বরপুর-১ পঞ্চায়েতে। প্রধান আব্দুর রহমান বলেন, ‘‘নদীবাঁধ পাকা করার জন্য আমরা সেচ দফতরের কাছে বার বার আবেদন করেছি। পাকা করা তো দূরের কথা, এই ৫০০ ফুট ভাল ভাবে মেরামতও করা হচ্ছে না।’’
দিন চারেক আগে যখন প্রথম ধস নামে তখন পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেই তড়িঘড়ি ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে মেরামত করা হয়। পরে হাত লাগায় সেচ দফতর। সেই ধসের সময়ে ছিল অমাবস্যার ভরা কটাল। জোয়ারের জলের তোড়ে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। ফের পূর্ণিমার কটাল আছে দিন দশেক পরে।
প্রধান বলেন, ‘‘বাঁধের এই অবস্থা। পূর্ণিমার ভরা কটালে কী হবে বুঝতে পারছি না। বাঁধ ভাঙলে বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হবে।’’