চন্দননগর দমকল কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
পুলিশ-প্রশাসনের পরে হুগলিতে এ বার করোনার ‘হামলা’ দমকল কেন্দ্রে। চন্দননগর দমকল কেন্দ্রের ১৯ জন কর্মী একসঙ্গে সংক্রমিত হয়েছেন। ফলে বৃহস্পতিবার থেকে ওই কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, চন্দননগরের লিচুতলায় জিটি রোড লাগোয়া ওই দমকল কেন্দ্রে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন কর্মী আছেন। দিন কয়েক আগে একাধিক কর্মীর জ্বর এবং সর্দি-কাশি হওয়ায় সকলের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়। রিপোর্ট এলে দেখা যায়, দু’জন আধিকারিক এবং ১৭ জন কর্মী পজ়িটিভ। তাঁদের কারও শরীরেই অবশ্য তেমন জটিলতা নেই। প্রত্যেকেই গৃহ-নিভৃতবাসে রয়েছেন। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, সেই কারনে অন্য আধিকারিক এবং কর্মীদেরও বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক সঙ্গে এত জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ায় জেলায় অন্যান্য দমকল কেন্দ্রের কর্মীরাও চিন্তিত।দমকল সূত্রের খবর, চন্দননগরের কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় কোনও অগ্নিকাণ্ড, বিপর্যয় বা করোনা সংক্রান্ত কাজের প্রয়োজনে এখানকার কর্মীদের দায়িত্ব সামলাতে হবে ভদ্রেশ্বর বা হুগলি দমকল কেন্দ্রকে। তাদের ঘটনাস্থলে পৌঁছতে কিছুটা বাড়তি সময় লাগবে। জেলা দমকলের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘বেশ কয়েক জন এক সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কেন্দ্রটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তার জন্য কাজে যাতে প্রভাব না পড়ে, তা দেখা হচ্ছে।’’অগ্নিকাণ্ড বা বিপর্যয় মোকাবিলার পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ রুখতেও দমকলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কোনও জায়গায় সংক্রমণ হলে সেখানে জীবাণুনাশক ছড়াতে হয় তাদের। এ ছাড়াও হাসপাতাল-সহ অন্যান্য ভবন স্যানিটাইজ় করতে হয়। সংক্রমিত এক দমকলকর্মীর অভিযোগ, ‘‘উপযুক্ত সুরক্ষা ছাড়াই কাজ করতে হয়। সবাই পিপিই কিট পাচ্ছি না।’’ দমকলের হুগলির ডিভিশনাল অফিসার সনৎ মণ্ডলের অবশ্য দাবি, ‘‘সংক্রমিত এলাকায় জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজে কর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী হিসেবে মাস্ক, গ্লাভস তো বটেই, পিপিই কিটও দেওয়া হচ্ছে। যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে তাঁরা যাতে কাজ করেন সে ব্যাপারে নিয়মিত সচেতন করা হয়।’’
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘সংক্রমিত এলাকায় স্যানিটাইজ় করতে যেতে হলেও দমকলকর্মীদের সরাসরি করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসতে হয় না। তাঁদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে।’’