চণ্ডীতলায় সরস্বতী নদীতে ভাসছে কাঠামো। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর মরসুম পেরিয়ে শীত হাজির। তবে, বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তির কাঠামো এখনও সরস্বতী নদীতে ডাঁই হয়ে রয়েছে। হুগলির চণ্ডীতলা ও ডানকুনিতে এই দৃশ্যই চোখে পড়ছে। প্রশাসনের কর্তারা বা জনপ্রতিনিধিরা পরিবেশ রক্ষা, নদী বাঁচানোর
কথা বলেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই উদ্যোগ কই!
জনপ্রতিনিধি থেকে পুজো কমিটির কর্তা চেনা বুলি আওড়েছেন, কাঠামো তোলা হবে। প্রশাসনের তরফেও যথারীতি একই আশ্বাস মিলেছে। তবে, এমনিতেই মৃতপ্রায় সরস্বতীতে এত দিন কাঠামো পড়ে থাকায় তার ‘গঙ্গাপ্রাপ্তি’ ত্বরান্বিত হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশকর্মীরা। এই প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের সদুত্তর মেলেনি।
চণ্ডীতলা ২ ব্লক এবং ডানকুনি পুর এলাকার বহু প্রতিমা সরস্বতী নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, নদীর অস্তিত্ব কার্যত হারিয়ে সরস্বতী খালে পরিণত হয়েছে। ডানকুনির কালীপুর ও চণ্ডীতলা ২ ব্লকের নৈটি পোল এলাকায় এই নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। শুক্রবারেও নদীতে প্রতিমার কাঠামো পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, এতে জল দূষণ বহু গুণে বেড়েছে। পরিবেশকর্মী মাবুদ আলি বলেন, ‘‘গঙ্গাপাড়ের পুরসভা বা পঞ্চায়েত প্রতিমার কাঠামো দ্রুত তুলে গঙ্গাকে দূষণের হাত থেকে বাঁচিয়েছে। সরস্বতী নদী থেকে প্রতি বার কাঠামো
তুলতে প্রশাসনের এই উদাসীনতা কেন, জানি না। দ্রুত কাঠামো তোলা হোক, এটাই চাইব।’’
জনপ্রতিনিধি বা শাসকদলের নেতানেত্রীদের অনেকেই বিভিন্ন পুজো কমিটির মাথায় রয়েছেন। ‘নির্মল বাংলা’র প্রচারে তাঁদের মঞ্চে দাঁড়িয়ে পরিবেশ দূষণ নিয়ে বক্তব্য পেশ করতে শোনা যায়। নদীতে কাঠামো পড়ে থাকা নিয়ে তাঁদের কেউ কেউ দায়সারা ভাবে জানিয়েছেন, ‘তুলে নেওয়া হবে’। হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় চণ্ডীতলার একটি দুর্গাপুজো কমিটির সভাপতি। তাঁর প্রতিক্রিয়া বলেন, ‘‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, কাঠামোগুলি তুলে নেওয়া হবে।’’
বিডিও (চণ্ডীতলা ২) অভিষেক দাস বলেন, ‘‘আমি এই পদে নতুন যোগ দিয়েছি। বিষয়টি জানা নেই। পুলিশের সঙ্গে কথা বলব। কোনও কমিটি থাকলে তাদের মাধ্যমে পরিষ্কার করতে বলব।’’