অচল ‘সজলধারা’ প্রকল্প । গোঘাটের কাঁকুড়িয়া আদিবাসীপাড়ায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল বিদ্যুৎ দফতর। তারপর থেকে ন’বছর ধরে গোঘাট-১ ব্লকের গোঘাট পঞ্চায়েতের কাঁকুড়িয়ায় গ্রামীণ জল সরবারহের ‘সজলধারা’ প্রকল্পটি অচল। গ্রামটিতে প্রায় ৪৫টি আদিবাসী পরিবারের বাস। জনসংখ্যা প্রায় ২৫০। গ্রামবাসীরা বছরভর জলসঙ্কটে ভোগেন। সম্প্রতি সেখানে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেওয়ায় পরিস্রুত পানীয় জলের দাবিতে সরব হয়েছেন গ্রামবাসীরা।
‘সজলধারা’ প্রকল্পটির বিল মিটিয়ে পুনরায় সেটি চালু করার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসী। তাঁদের মধ্যে শুকদেব হাঁসদাবলেন, “সজলধারার লাইন কেটে দেওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে আমাদের তরফে পঞ্চায়েতে একাধিকবার দরবার করা হয়েছে। খালি আশ্বাস মিলছে। কিন্তু ন’বছরেও কোনও সুরাহা হয়নি।”
‘সজলধারা’ প্রকল্পটি বাম আমলে হয়েছিল জানিয়ে গ্রামবাসী শ্যামলাল হাঁসদা, আনন্দ টুডু, রূপচাঁদ হাঁসদা প্রমুখের ক্ষোভ, গ্রামে পঞ্চায়েতের বসানো একটি নলকূপ এবং শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের একটি নলকূপই সম্বল। কিন্তু গ্রীষ্মে দুই নলকূপ থেকেইভাল জল মেলে না। ডায়রিয়া হওয়ার পরেও পরিস্রুত পানীয় জলের সজলধারার গতি হয়নি।
গ্রামবাসীর দাবি ন্যায্য জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদের সদস্য তথা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মানিক মাল বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে একটি গভীর নলকূপ বসানোর জন্য জেলায় প্রস্তার পাঠিয়েছি। তা থেকেই পুরো গ্রামে জল সরবরাহের পরিকল্পনা আছে। তা ছাড়া জলস্বপ্ন প্রকল্পে পাশেই শুনিয়া গ্রামে একটি কাজ হওয়ার কথা। কাঁকুড়িয়া গ্রামটি তার আওতাতেও পড়বে।”
সজলধারা প্রকল্পের কী হবে?
উপপ্রধান জানান, ওই প্রকল্প থেকে অতীতে অন্যায় ভাবে কয়েকজন জমিতে সেচ দেওয়ায় বিদ্যুতের বিলের পরিমাণ হয়ে গিয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। সেই বিল মেটানোর কথা ছিল সে সময়কার গ্রামবাসীকে নিয়েগড়া কমিটির। তাঁরা বিল মেটাননি। তৃণমূল ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ক্ষমতায় আসার পর সেই কমিটির কাছে প্রস্তাব রাখা হয়েছিল, জমিতে সেচ বাবদ যে টাকা তাঁরাজমির-মালিকদের কাছে আদায় করেছিলেন, সেই টাকা পঞ্চায়েতকে দেওয়া হোক। বাকিটা পঞ্চায়েতথেকে দিয়ে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মেটানো হবে। কিন্তু দিনমজুর পরিবারগুলো তা দিতে পারেনি।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মার্চের গোড়ায় গ্রামোন্নয়ন দফতরের একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জনকল্যাণ পরিষেবায় বিদ্যুতের বিল এ বার কেন্দ্রীয় পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তহবিল থেকে মেটাতে পারবে ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত। এ ক্ষেত্রে অতীতের বকেয়া বিলটা ওই নিঃশর্ত তহবিল থেকে মেটানো যায় কি না, দেখা হচ্ছে।