প্রতীকী ছবি।
হাওড়া জুড়ে পানীয় জলের সঙ্কট দীর্ঘ কয়েক দশকের সমস্যা। সেই সমস্যা মেটাতে উত্তর হাওড়ার সালকিয়ায় নতুন জল প্রকল্পের পাশাপাশি পানীয় জলের সামগ্রিক উন্নয়নে প্রায় ৪৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার।
বাম আমলে তৈরি পদ্মপুকুর জল প্রকল্প ছাড়া গত চার দশকে আর কোনও জল প্রকল্প হয়নি হাওড়ায়। যার ফলে শহরের জনসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পেলেও পানীয় জলের উৎপাদন বাড়েনি। ফলে প্রতি গ্রীষ্মে হাওড়ার জলসঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করে। সোমবার হাওড়া পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পানীয় জলের এই সঙ্কট মেটাতেই মোট ৪৬২ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। এ দিন সেই কথা ঘোষণা করে হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাংলা নববর্ষে পানীয় জল প্রকল্পের জন্য টাকা বরাদ্দ করে হাওড়ার বাসিন্দাদের জন্য সবচেয়ে বড় উপহার দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে পানীয় জলের জন্য এত টাকা বরাদ্দ হাওড়ায় কোনও দিন হয়নি।’’
এর মধ্যে সালকিয়ায় নতুন জল প্রকল্প তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে ২৮০ কোটি টাকা। এই জল প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে উত্তর হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় জলের সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে বলে দাবি পুরসভার। এ ছাড়া পদ্মপুকুর জল প্রকল্পের জন্য বটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে যে ইনটেক জেটি রয়েছে, সেটির
পরিকাঠামো উন্নতির খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৬ লক্ষ টাকা।
এর পাশাপাশি বেলগাছিয়ায় ভূগর্ভস্থ জলাধারের জন্য ১৬ লক্ষ এবং পদ্মপুকুর জল প্রকল্পের আরও নানাবিধ কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। এ ভাবেই শহর জুড়ে পানীয় জলের বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্য সরকারের বরাদ্দ করা টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
সুজয়বাবু এ দিন বলেন, ‘‘পানীয় জল প্রকল্পগুলি চালু হলে হাওড়া পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ডের যে সামগ্রিক উন্নতি হবে, তাতে প্রায় ৭১৫৮৭টি বাড়িতে পর্যাপ্ত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।’’ বর্তমানে হাওড়ার সংযুক্ত ওয়ার্ড-সহ অন্যান্য ওয়ার্ডেও যে গ্রীষ্মে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দেয়, সে কথা মানছেন সুজয়বাবু। কারণ, পদ্মপুকুর থেকে সরবরাহ করা জলের চাপ অনেক জায়গাতেই কম থাকে। ফলে উত্তর, মধ্য, দক্ষিণ হাওড়া বা শহরের সংযুক্ত এলাকার বহু বাড়িতেই পুরসভার সরবরাহ করা জল পর্যাপ্ত পরিমাণে পৌঁছয় না।
নতুন জল প্রকল্পগুলি চালু হয়ে গেলে এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে বলে মনে করছেন পুর কর্তৃপক্ষ। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘এই জল প্রকল্পগুলির কাজ শেষ হলে হাওড়া শহরের কয়েক দশকের পানীয় জলের সঙ্কট আর দু’-এক বছরের মধ্যেই মিটে যাবে।’’