স্বাগতা মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে পাঁচটা গরু। দুধ বেচে কোনও রকমে সংসার চলে। তবে, অনটনের আঁচ মেয়ে স্বাগতাকে পেতে দেন না হাওড়ার বাগনানের নুন্টিয়ার বাসিন্দা শুভেন্দু মুখোপাধ্যায়। উচ্চ মাধ্যমিকের ফলে বাড়িতে খুশি উজাড় করে দিয়েছেন স্বাগতা। বাগনান মুগকল্যাণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ওই পরীক্ষার্থী পেয়েছেন ৪৬৭ নম্বর। ইচ্ছে, সংস্কৃতে অনার্স নিয়ে পড়বেন। শিক্ষিকা হবেন।
শুভেন্দু জানান, সকাল এবং সন্ধ্যা মিলিয়ে তিনি ৩০-৪০টি বাড়িতে দুধ দেন। মাসে আয় মেরেকেটে ৫-৬ হাজার টাকা। তা দিয়েই সংসার চলে। মেয়ের পড়াশোনাও। তিনি বলেন, মেয়ের যতদূর ইচ্ছে পড়াবেন। কষ্ট করেও খরচ জোগাবেন। স্বাগতা তাঁদের একমাত্র সন্তান। বাবার কথায়, ‘‘বিদ্যালয়ের পাশাপাশি গৃহশিক্ষকেরা মেয়েকে খুব সাহায্য করেছেন। গৃহশিক্ষকেরা খুব কম টাকায় পড়িয়েছেন। এ বারেও যদি এমন মানুষ পাই!’’
সাফল্যের পিছনে বিদ্যালয় এবং গৃহশিক্ষকদের কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেন না কৃতী ছাত্রীও। মার্কশিট হাতে তিনি বলেন, ‘‘বাবা অনেক কষ্ট করে পড়াচ্ছেন। চাকরি করে বাবার পাশে দাঁড়াব।’’ আর বাবার প্রত্যয়, ‘‘জানি, মেয়ে বড় হয়ে অভাব ঘোচাবে।’’
এ বার ১২৫ বছর পার করা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষিকা অনুভা মণ্ডল বলেন, ‘‘স্বাগতা আমাদের বিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করেছে। পঞ্চম শ্রেণি থেকে এখানেই পড়েছে। আগামী দিনেও নিশ্চয়ই সফল হবে।’’