WB assembly election

WB assembly election 2022: প্রার্থীকে মার, বুথত্যাগ বহু বিরোধী এজেন্টের

যথারীতি এই পরিস্থিতির জন্য শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। শাসক দল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৪৮
Share:

n হাতেনাতে: আরামবাগ পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী ধরলেন এক ‘ভুয়ো’ ভোটার। নিজস্ব চিত্র

এ বার কোথাও কোনও বোমার শব্দ মেলেনি। রক্তও ঝরেনি। তা সত্ত্বেও রবিবার সকালে ভোটগ্রহণ পর্বের শুরু থেকেই বিরোধী এজেন্ট শূন্য হতে থাকল আরামবাগের একের পর এক বুথ। আক্রান্ত হলেন বিরোধী প্রার্থীরা। শহরের নানা প্রান্তে দেখা গেল মারধরের ছবি। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ মোট ৭০টি বুথের ৬০টিতেই শাসক দলের এজেন্টকেই একা বসে থাকতে দেখা গেল।

Advertisement

যথারীতি এই পরিস্থিতির জন্য শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। শাসক দল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু সাধারণ ভোটারদের অনেকে দাবি করেছেন, বুথে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের ভোট পড়ে গিয়েছে। সব বুথে পুলিশ ছিল ঠিকই। কিন্তু তাঁরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ।

এসডিপিও(আরামবাগ) অভিষেক মণ্ডলের দাবি, “ভোর ৫টা থেকে পুলিশ সর্বত্র সক্রিয় ছিল। কয়েকটি বিক্ষিপ্ত অভিযোগ ছাড়া ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement

গতবার আরামবাগ পুরসভায় ১৯টি ওয়ার্ডের ১৬টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে তৃণমূল বোর্ড গঠন নিশ্চিত করেছিল ভোটের আগেই। এ বার সেটা হয়নি। শেষ পর্যন্ত প্রায় সব ওয়ার্ডেই বিরোধীরা প্রার্থী রাখতে পেরেছিল। কিন্তু ভোটের সময় বুথে বিরোধী এজেন্ট বসেও উঠে গেলেন কেন?

এই প্রশ্নেরই শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, বুথ আঁকড়ে যে ক’জন বসে থাকার চেষ্টা করছিলেন, তাঁদের কাউকে মারধর করে, কাউকে হুমকি দিয়ে সরানো হয়।

সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ বুথে এজেন্ট বসাতে যাওয়ার পথে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী সুশীল বাড়ুই আক্রান্ত হন। তাঁর পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সুশীলবাবুকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রবীন্দ্রভবনের বুথে নিজের এজেন্ট বসাতে গিয়ে মার খান ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী গুরুপদ খাঁড়াও। তাঁকেও ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। একই সময়ে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বসন্তপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সিপিএম প্রার্থী তাপসী বাগের এজেন্টকে ঢোকার মুখে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

ভোট হল শহরে। অথচ, দিনভর বহু বুথ এলাকায় দেখা গেল গোঘাট এবং আরামবাগের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার পরিচিত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। প্রায় সকলেরই দাবি, তাঁরা আত্মীয়ের বাড়ি এসেছেন।

বিজেপির উপর প্রথম আঁচ আসে সকাল ১০টা নাগাদ। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সৌভিক কুন্ডুকে মারধর এবং তাঁর এজেন্টকে বুথ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিজেপির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা প্রার্থীকেও বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারধর করে ভয় দেখিয়ে এজেন্ট সমেত বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দেড়টা নাগাদ ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ ঘোষ নিজের বুথ বয়েজ প্রাথমিক স্কুল চত্বরে বসে অভিযোগ করেন,
“চোখের সামনেই তৃণমূল ছাপ্পা ভোট করাচ্ছে। যতটা পারছি, আটকানোর চেষ্টা করছি।”

শেষ পর্যন্ত বাম ও কংগ্রেস দু’টি করে বুথে এবং নির্দল হয়ে দাঁড়ানো তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের তিনটি ওয়ার্ডের বুথের এজেন্টরা টিকে ছিলেন। বিজেপি সব ক’টি ওয়ার্ডেই পুনর্নির্বাচনের দাবি করে মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে। স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ব্লক কংগ্রেস নেতা
তথা ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ পাল বলেন, “ভোটের নামে প্রহসন হল।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement