arrest

পিসতুতো ভাইয়ের ছোড়া গরম জলে ঝলসে গেল যুবতীর শরীর! কোন্নগরে গ্রেফতার বাবা এবং ছেলে

অভিযুক্ত পিসতুতো ভাইকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি যুবতীর পিসি এবং পিসেমশাইয়ের বিরুদ্ধে এই দুষ্কর্মে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পিসেমশাইকেও পাকড়াও করেছে পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কোন্নগর শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ১৩:২৯
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদে এক যুবতীর গায়ে গরম জল ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল হুগলির কোন্নগরে। অভিযুক্ত ওই যুবতীর পিসতুতো ভাই। পাশাপাশি পিসি এবং পিসেমশাইয়ের বিরুদ্ধে এই দুষ্কর্মে মদত দেওয়ার অভিযোগ করেছেন আক্রান্ত। বুধবার এই ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত বাবা-ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে খবর,কোন্নগরের শরৎচন্দ্র চ্যাটার্জি লেনের বাসিন্দা প্রণব কুমার আদকের মেয়ে ঐশ্বর্য আদকের উপর ‘হামলা’ করেন তিন আত্মীয়। গত ২ অগস্ট সন্ধ্যায় ২৫ বছরের ওই যুবতীর গায়ে গরম জল ঢেলে দেয় পিসতুতো নাবালক ভাই। গরম জলে শরীর-মুখ ঝলসে যায় যুবতীর। প্রণবের অভিযোগ, তাঁকে এবং তাঁর মেয়েকে পৈতৃক বাড়ি থেকে উৎখাত করতে নানা রকম অভিসন্ধি করেন বোন এবং ভগিনীপতি। গত ২ অগস্ট ঘটনার দিন তিনি কাজে গিয়েছিলেন। রাত ৯টা নাগাদ বাড়ি ফিরে মেয়ের কাছে জানতে পারেন এই ‘নির্মমতার কথা’। প্রণবের দাবি, তাঁর মেয়ের গায়ে ঢালা হবে বলে জল ফোটানো হয়। মেয়েকে আক্রমণের পর পুরো ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। প্রণবের কথায়, ‘‘আমার বোন বোরোলিন লাগিয়ে দেয় মেয়ের হাতে-মুখে। আর ভগিনীপতি আইসক্রিম খাওয়াতে নিয়ে যায় আমার মেয়েকে। যেন কিছুই ঘটেনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাড়ি ফিরে মেয়েকে দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। ও এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে যে গুছিয়ে কথা বলতে পারছিল না। মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়েছে। আমি এই অত্যাচারের বিচার চাই।’’ ওই যুবতী বর্তমানে কোন্নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রণব জানান, তাঁর বাবা পান্নালাল আদকের মৃত্যুর আগে বোন এবং ভগিনীপতি জোর করে তাঁদের নামে বাড়িটি নিজেদের নামে লিখিয়ে নেন। তাঁর কথায়, ‘‘উত্তরপাড়ায় ওদের নিজেদের বাড়ি থাকলেও গত পাঁচ বছর ধরে আমাদের পৈতৃক বাড়িতেই এসে থাকছে। সেই বাড়িতে আমি মেয়েকে নিয়ে থাকি। গত মে মাসে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হওয়ার পর মেয়েটা একা হয়ে গিয়েছে বাড়িতে। আমি চাকরির সূত্রে দিনের বেশির ভাগ সময় বাড়ির বাইরে থাকি। সেই সুযোগে মেয়ের উপর নানা রকম অত্যাচার করে ওরা। এর আগেও এক বার ওর উপরে জলভর্তি পিতলের বালতি ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছিল আমার ভাগনে। সেটা আমি দেখে ফেলি। তখন ওরা বলেছিল, ‘অলৌকিক ঘটনা’। সে যাত্রায় মেয়েকে কোনও ভাবে বাঁচিয়েছি। আবার একই রকম ঘটনা!’’

Advertisement

অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ অভিযুক্ত দীপঙ্কর মৈত্র এবং তাঁর নাবালক পুত্রকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার দীপঙ্করকে শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হবে। তাঁর ছেলেকে জুভেনাইল আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এ নিয়ে কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, ‘‘সম্পত্তির জন্য মানুষ যে এত নির্মম হতে পারে, তা দেখেই খারাপ লাগছে। এই ঘটনা যদি সত্যি হয়, পুলিশ তার জন্য ব্যবস্থা নেবে। অভিযুক্তদের পক্ষে কেউ থাকবে না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সম্পত্তি নিয়ে ভাইবোনের মধ্যে দীর্ঘ দিনের অশান্তির জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement