জলমগ্ন কোনা এক্সপ্রেসওয়ের নতুন লেন। —নিজস্ব চিত্র।
যানজট কমাতে কয়েক মাস আগে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে রেল ওভারব্রিজের নীচে নতুন লেন উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাস্তা নির্মাণকারী সংস্থার পরিকল্পনাগত সমস্যায় অল্প বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ার অভিযোগ ওই রাস্তায়। মঙ্গলবারের টানা বৃষ্টিতে এমনই জল জমল ওই রাস্তায় যে, বন্ধ হয়ে গেল যান চলাচল। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, নিরাপত্তার খাতিরে কলকাতাগামী ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে দেখা যায়, কোমরসমান জল জমে রয়েছে গরফা ক্রসিংয়ের সংশ্লিষ্ট লেনে। তাই বাধ্য হয়ে পুরনো রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয় প্রশাসন। তাতে যানজট বেড়ে যায়। অন্য দিকে, বর্ষার জমা জলে ওই রাস্তায় স্নান করতে নেমে পড়ে কচিকাঁচারা। জল জমার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকেরা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তাঁরা জানান, অতিরিক্ত কয়েকটি পাম্প চালিয়ে জল সরানো হচ্ছে। আশপাশের এলাকার জল ওই লেনে আসছে বলেই অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘এলাকাটা নিচু। ঠিক মতো পরিকল্পনা না করে রাস্তা তৈরি করায় এই সমস্যা হয়েছে।’’ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, আগামী দিনে এই সমস্যার যাতে পাকাপাকি সমাধান করা যায়, সেই পদক্ষেপ করা হবে।
উল্লেখ্য, ডিভিসি থেকে আবার জল ছাড়ার ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে হাওড়ার একাধিক জায়গায়। আমতা এবং উদয়নারায়ণপুরের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই আশঙ্কাজনক। দফায় দফায় বৃষ্টিতে মুণ্ডেশ্বরী, রূপনারায়ণ এবং দামোদরের জলস্তর বাড়ছে। তার মধ্যে মঙ্গলবার সকালেই ডিভিসি থেকে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এর ফলে নদীর ধারে বেশ কিছু নিচু কৃষিজমি এলাকায় জল জমতে শুরু করেছে। এতে চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। আমতা-২ ব্লকের ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া চিতনান গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু গ্রামের মানুষজন বন্যার আতঙ্কে রয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক প্রচার শুরু হয়েছে। দুই জায়গায় ত্রাণশিবির খোলার পাশাপাশি খাবার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দামোদর নদের জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় উদয়নারায়ণপুরের হরালি, দাসপুর, সীতাপুর, সুলতানপুর, গজা, কুড়চি, হরিহরপুর, হোদল, রামপুর বালিচক, শিবপুর, বিনোদবাটি, জঙ্গলপাড়া, শিবানীপুর, পাঁচারুল-সহ বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।