Potato Prices

আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট উঠল, আলোচনায় কাটল জট, জোগান স্বাভাবিক হতে পারে বৃহস্পতিতেই

রাজ্যের সীমান্তগুলিতে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে ধর্মঘট শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। এ জন্য হিমঘর থেকে আলু বেরোনো প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বেড়ে যায় দাম।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

হরিপাল শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ১৬:৫৫
Share:

আবার স্বাভাবিক হচ্ছে আলুর জোগান। —ফাইল চিত্র।

আলোচনা থেকে বেরিয়ে এল সমাধান। তিন দিন পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলেন আলু ব্যবসায়ীরা। বুধবার হুগলির হরিপালে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। তার পরেই ধর্মঘট তুলে নেওয়ার কথা জানালেন ব্যবসায়ীরা। আশা করা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার থেকেই রাজ্যে আলুর জোগান আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ফলে আলুর ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ে যে নাভিশ্বাস উঠেছিল আমজনতার, সেখান থেকে এ বার রেহাই মিলবে।

Advertisement

রাজ্যের সীমান্তগুলিতে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। এ জন্য হিমঘর থেকে আলু বেরোনো প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। আড়তগুলিতেও আলুর জোগান কমে যায়। প্রভাব পড়ে বাজারে। বুধবার রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে চন্দ্রমুখী আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। এই অবস্থায় ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেই তাকিয়ে ছিল বুধবারের বৈঠকের দিকে।

দুপুরে হরিপালে বৈঠকের পর ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা জানান, জট কেটেছে। বুধবার রাত থেকেই বিভিন্ন হিমঘর থেকে আলু বার করা হবে। আবার বাজারে বাজারে জোগান স্বাভাবিক হয়ে যাবে। বৃহত্তর স্বার্থে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হল। আলু ব্যবসায়ী সমিতির তরফে সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৃহত্তর স্বার্থে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হল। আমরা সরকারের পাশে আছি। তবে রাজ্য থেকে যে আলু বাইরে যায়, সেই রফতানির বিষয়টিও যেন সরকার খেয়াল রাখে। মন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। বিবেচনা করে দেখবেন বলেছেন। আমরা আমাদের দাবিদাওয়া লিখিত ভাবে সরকারের কাছে জানাচ্ছি।’’ অন্য দিকে, বৈঠকের পর ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ডস্টোর অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে পতিতপাবন দে বলেন, ‘‘আমরা সরকারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যে ১১০ লক্ষ টন আলু উৎপাদন হয়। এত আলু আমাদের রাজ্যে খাওয়া যায় না। তাই ভিন্‌রাজ্যে পাঠাতেই হয়। আলু আমাদের রাজ্যের অন্যতম অর্থকরী ফসল। অর্থনীতিকে অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ করে। আলুর দাম বেশি থাকলে চাষিরাও কিছু টাকা পান। তাই আলু যাতে ন্যায্য মূল্যে সবাই পান, সে দিকে খেয়াল রাখব।’’ হিমঘর সংগঠনের তরফে সুনীল রানা জানিয়েছেন, রাজ্যের সঙ্গে সমতা রেখে যাতে ভিন্‌রাজ্যে আলু পাঠানো যায়, সেটা দেখতে হবে।

Advertisement

অন্য দিকে, মন্ত্রী বেচারাম বৈঠক থেকে বেরিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের দিক থেকে যা যা সাহায্য করা যায়, সেটা বলেছিলাম। সরকার পক্ষ সাড়া দিয়েছে। তাই ব্যবসায়ীরাও কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছেন।’’ তিনি জানান, বৈঠকের পর সবাই আশাবাদী। আলোচনা সদর্থক। এ বার হিমঘর থেকে ২৬ টাকা দরে আলু পাঠানো হবে বিভিন্ন বাজারে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ৪৯৩টি ‘সুফল বাংলা’ কাউন্টার খোলা আছে।’’ মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘আলু ব্যবসায়ীরা যদি কথা রাখেন, তা হলে আমরা ৩০ টাকার নীচে আলু খাওয়াতে পারব রাজ্যবাসীকে।’’ তিনি জানান, দিল্লি-সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যে আলুর দাম অনেক বেশি। সেই তুলনায় বাংলায় আলুর দাম অনেক কম। আলুর জোগান স্বাভাবিক হলে ভিন্‌রাজ্যে আলু পাঠানোর বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement