এলোমলো করা হয়েছে ঘরের জিনিস। —নিজস্ব চিত্র।
ফের চুরি চুঁচুড়ার প্রয়াত ক্রীড়াবিদ জীবেন্দ্রনাথ মৈত্রের বাড়িতে। শনিবার রাতে বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষীর কাছ থেকে ওই খবর পান জীবেন্দ্রনাথের মেয়ে সহেলি। তিনি ছিলেন হায়দরাবাদে। রবিবার কোদালিয়ায় ওই বাড়িতে ফিরে তিনি জানান, বেশ কিছু সোনার গয়না এবং নগদ কয়েক লক্ষ টাকা খোওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন সময়ে তাঁর বাবার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের খেলায় পাওয়া ট্রফি, মেডেল, শংসাপত্রের মতো অমূল্য সম্পদও পাওয়া
যাচ্ছে না।
সহেলি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় চুঁচুড়া থানার পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ২০১৬ সালে কয়েক মাসের ব্যবধানে জীবেন্দ্রনাথ ও তাঁর স্ত্রী মারা যান। সহেলিই বাড়িতে থাকেন। কর্মসূত্রে তিনি কোথাও গেলে বাড়ি বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীর হাতে দিয়ে যান। এই নিয়ে তিন বার চুরি হল ওই বাড়িতে। আগের দু’টি ঘটনার কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
এ বারও বাড়ি ছিল বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীর হাতে। ওই রক্ষী জানান, শনিবার রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ শৌচকর্ম সারতে তিনি ঘণ্টাখানেকের জন্য কাছেই সাহাগঞ্জে নিজের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ফিরে চুরি টের পেয়ে সহেলিকে জানান।
রবিবার ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, দরজার তালা ভাঙা। ঘরের জিনিসপত্র তছনছ। দেওয়ালের শোকেসে সাজানো জীবেন্দ্রনাথের বহু মেডেল এবং ট্রফি। তার মাঝখান থেকেই বেশ কিছু লোপাট হয়েছে বলে সহেলির দাবি। তিনি চান, খোওয়া যাওয়া জিনিসপত্র ফিরিয়ে
দিক পুলিশ।
জীবেন্দ্রনাথের হাত ধরে বহু মানুষ ক্রীড়াজগতে নাম করেছেন। একসময়ে কাপাসডাঙা সতীন সেন মাঠের ‘দ্রোণাচার্য’ ছিলেন তিনি। স্থানীয় অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের এই ‘দ্রোণাচার্যের’ কাছে বহু মানুষ লং জাম্প, হাই জাম্প, পোল ভল্ট, ডিসকাস থ্রো কিংবা দৌড়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। প্রশিক্ষণে তিনি জোর দিলেও বয়স্ক-ক্রীড়ায় জীবেন্দ্রনাথের সাফল্যও নজরকাড়া। ১৯৮৩ সাল থেকে প্রবীণদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় একের পর এক সাফল্য পেয়েছেন তিনি। হংকংয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় আন্তর্জাতিক ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড মিট, আমেরিকায় অনুষ্ঠিত মাস্টার্স অলিম্পিক, মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ভেটারেনস মিট-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বহু সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ রয়েছে
তাঁর ঝুলিতে।