Bike Theft

ভিডিয়ো দেখে প্রশিক্ষণ, সেফটিপিন দিয়ে লক খুলে বাইক চুরি-চক্রের হদিস হাওড়ায়

দুই যুবকের তৈরি করা ওই ভিডিয়ো দেখে প্রশিক্ষণ নেওয়া এই চক্রের সদস্য তরুণ ও কিশোরেরা চাবি ছাড়াই স্কুটার বা বাইকের লক খুলে তা বেমালুম লোপাট করে দিচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৯
Share:

হাওড়ায় তৈরি হয়েছে স্কুটার ও বাইক চুরি-চক্রের একটি দল। প্রতীকী ছবি।

সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় ভিন্‌ রাজ্যের দুই ব্লগার দর্শকদের শিখিয়েছেন, স্কুটার ও মোটরবাইকের চাবি হারিয়ে গেলে কী ভাবে সেফটিপিনের সাহায্যে লক খুলে গাড়ি চালানো যাবে। আর সেই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করেই হাওড়ায় তৈরি হয়েছে স্কুটার ও বাইক চুরি-চক্রের একটি দল। যারা ‘অপারেশন’ চালাচ্ছে অনেকটা জামতাড়া গ্যাংয়ের কায়দায়। দুই যুবকের তৈরি করা ওই ভিডিয়ো দেখে প্রশিক্ষণ নেওয়া এই চক্রের সদস্য তরুণ ও কিশোরেরা চাবি ছাড়াই স্কুটার বা বাইকের লক খুলে তা বেমালুম লোপাট করে দিচ্ছে। শিবপুর থানা এলাকায় একটি স্কুটার চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে হাওড়া সিটি পুলিশের নজরে এসেছে এই নতুন দলের কার্যকলাপ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, শিবপুরের ধর্মদাস গাঙ্গুলি লেনের বাসিন্দা রাজনকুমার বর্মা সম্প্রতি থানায় তাঁর স্কুটার চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে রাজন জানিয়েছেন, তিনি বাড়ির সামনে স্কুটারটি লক করে রেখেছিলেন। তা সত্ত্বেও সেটি চুরি হয়ে যায়। তদন্তে নেমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে পুলিশ বছর পনেরোর এক কিশোর এবং শেখ আবিদ আলি নামে ১৮ বছরের এক তরুণকে গ্রেফতার করে। পরে আবিদকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। অন্য দিকে, ধৃত কিশোরকে একটি হোমে পাঠানো হয়েছে।

আবিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, বাইক চুরির এই চক্রটি তৈরি হয়েছে ভিন্‌ রাজ্যের দুই ব্লগারের তৈরি করা ভিডিয়ো দেখে। সেই ভিডিয়ো দেখার পরে উলুবেড়িয়া এবং বাগনান এলাকায় অল্পবয়সি ছেলেদের নিয়ে আয়োজিত হয় একটি প্রশিক্ষণ শিবির। সেখানে কয়েক মাস প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে চক্রটি কাজ শুরু করে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ধৃত আবিদ এই চক্রের অন্যতম মাথা। পাঁচলার বাসিন্দা ওই তরুণ তার সঙ্গীদের নিয়ে রোজ সকালে ট্রেনে হাওড়ায় আসত। এর পরে হাওড়া স্টেশন চত্বর-সহ শিবপুর, ব্যাঁটরা, গোলাবাড়ি এলাকায় ঘুরে পার্কিংয়ে, রাস্তায় কিংবা গলিতে দাঁড় করানো স্কুটার ও বাইকের লক সেফটিপিন দিয়ে অনায়াসে খুলে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেত। চুরি হওয়া ওই গাড়িগুলি জমা পড়ত এই চক্রের পান্ডাদের হাতে। পরে সেগুলি বিক্রির টাকা থেকে কমিশন পেত আবিদের মতো সদস্যেরা।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রের জাল রাজ্যের আর কোন কোন জেলায় ছড়িয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তা জানার চেষ্টা চলছে। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ধৃতদের থেকে দু’টি বাইক ও দু’টি স্কুটার উদ্ধার হয়েছে। চুরি যাওয়া আরও বাইক উদ্ধারের জন্য তল্লাশি চলছে। এই ধরনের চুরি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement