কামারপুকুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
নামে গ্রামীণ হাসপাতাল। কিন্তু, জেনারেটর কেনার টাকার অভাবে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা দিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে হুগলির গোঘাট-২ ব্লকের কামারপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালকে।
রোগী, চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ ফুঁসছেন, পুজোর জন্য কোটি কোটি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে খয়রাতি করা হচ্ছে। অথচ, সরঞ্জামের কয়েক লক্ষ টাকা নাা মেলায় হাসপাতালে পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। এক স্বাস্থ্যকর্মীর ক্ষোভ, ‘‘রাজ্য সরকার শুধুই বলে, টাকা নেই। ২০-২২ লক্ষ টাকার জেনারেটরের জন্য চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। পুজোর বেলায় এত টাকা আসে কোথা থেকে!’’ অভিযোগ, জেনারেটরের জন্য চিঠিচাপাটি পাঠানো হলেও স্বাস্থ্যভবন চুপ!
৩০ শয্যার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৬০ শয্যার গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত হয়েছে ২০১৫ সালে। নতুন দোতলা ভবন হয়েছে। কিন্তু, কয়েক বছরেও জেনারেটর জোটেনি। পুরনো জরাজীর্ণ একতলা ভবনেই নামমাত্র পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। প্রসূতি বা শিশু বিশেষজ্ঞ, অ্যানাস্থেসিস্টের মতো পদ ফাঁকা। পরিকাঠামোয় ঘাটতি মানছে স্বাস্থ্য দফতর। বিএমওএইচ দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘কিছু ঘাটতি আছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশ দিলেই নতুন ভবনে যাব।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালে নতুন পদ তৈরি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং জেনারেটরের বিষয়টি রাজ্যে জানানো আছে। এখনও কিছু হয়নি।’’
নতুন আধুনিক বাতানুকূল ভবনে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ জরুরি। কিন্তু, কামারপুকুরে বিদ্যুৎ সরবরাহের হাল খারাপ। ফলে, বিকল্প ব্যবস্থা দরকার। পুরনো ভবনে কম শক্তির জেনারেটর ভাড়া করে শুধুমাত্র ভ্যাকসিন এবং মূল্যবান ওষুধ রাখা হয়।
এই হাসপাতালে গোঘাট-১ ও ২ ব্লক ছাড়াও লাগোয়া বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশ থেকে রোগী আসেন। বহির্বিভাগে দৈনিক গড়ে পাঁচশোর বেশি রোগী আসেন। এখান থেকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল প্রায় ২০ কিমি দূরে। ২৮ কিমি দূরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতাল। ৩০ কিমি দূরে বাঁকুড়ার গোগরা ব্লক হাসপাতাল।
পুজোর অনুদানের সঙ্গে স্বাস্থ্য-পরিকাঠামোর তুলনা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ তথা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন অপরূপা পোদ্দার রুষ্ট। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুজো-অনুদানের সঙ্গে হাসপাতালের জেনারেটরের বিষয়ের তুলনা করে কুৎসা করা হচ্ছে। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো আরও ভাল করে হোক, কে না চায়! জুলাই মাসে রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে জেনারেটর নিয়ে আলোচনা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরে বলাও হয়েছে।’’
জেনারেটর মিলবে কবে, সেই উত্তর অবশ্য অমিল।