অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন শিক্ষকরা। শ্যামপুরে। ছবি: সুব্রত জানা
প্রাপ্তবয়স্কদের পর চলতি বছরের গোড়াতেই ১৫-১৮ বছর বয়সিদের করোনা-টিকার ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে বিভিন্ন স্কুলে, মাদ্রাসায়। কিন্তু কিছু কুসংস্কারের বশে অনেক পড়ুয়া এই টিকা নিতে অস্বীকার করছে বলে অভিযোগ। সেই ভ্রান্তি কাটাতে পড়ুয়াদের বাড়ি গিয়ে বোঝাচ্ছেন হাওড়ার শ্যামপুরের খাজনাবাহালা হাই মাদ্রাসার শিক্ষকরা। করোনা সংক্রমণে লাগাম দিতে এই টিকাই যে অন্যতম বর্ম, তা নিয়ে পড়ুয়াদের পাশাপাশি বোঝানো চলছে অভিভাবকদেরও। স্লোগান দেওয়া হয়েছে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুন্দর জীবন/সবারই হোক টিকাকরণ’।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানান, আজ, বৃহস্পতিবার পড়ুয়াদের জন্য টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। তার জন্য সব শিক্ষার্থীকে শিবিরে আসার জন্য ফোন করা হয়। সে সময় টিকাকরণের বিষয়ে পড়ুয়াদের ভয় ও নিস্পৃহতা নজরে আসে শিক্ষকদের। অধিকাংশ শিক্ষার্থী জানায়, তারা টিকা নিতে চায় না। এরপরই শিক্ষকরা ওই পড়ুয়াদের বাড়ি গিয়ে বোঝান। অভিভাবকদের অনুরোধ জানানো হয়, যাতে পড়ুয়ারা টিকা নেয়। এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘পড়ুয়াদের বাড়ি গিয়ে বোঝা যায়, অনেক অভিভাবকও করোনা টিকা নেননি। তাই তাঁরা পড়ুয়াদেরও টিকা নিতে বাধা দিয়েছিলেন। আমরা অভিভাবকদেরও টিকা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘টিকা নিয়ে একটা ভীতি আছে, অস্বীকার করব না। তবে শিক্ষকরা বোঝানোর পর মত বদলেছি। ছেলেকে করোনা টিকা নিতে মাদ্রাসা পাঠাব। আর পরিবারের সকলে টিকা নেব।’’
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘করোনাকালে মাদ্রাসার প্রায় ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষ থেকে হারিয়ে গেছে। এর পর কোনও দুর্ঘটনা হলে শিক্ষালয়ে আসার ভীতি আরও বাড়বে। সেই জন্য মাদ্রাসার পক্ষ থেকে শিক্ষকরা চেষ্টা করছি, যাতে সব পড়ুয়াকে টিকা দেওয়া যায়।’’
মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সম্পাদক শেখ সারওয়ারউদ্দিন বলেন, ‘‘টিকাকরণ নিয়ে ফোনে জানানোয় পড়ুয়াদের তেমন সাড়া মেলেনি। শিক্ষকরা বাড়ি গিয়ে বোঝানোর পর শিবিরে কতজন আসে সেটাই দেখার।’’