লঞ্চের তলা থেকে উদ্ধার হয় ছাত্রের দেহ। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুল থেকে পালিয়ে গঙ্গাভ্রমণে বেরিয়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। বাড়ি ফেরার পথে ঘটে অঘটন। উত্তরপাড়া ফেরিঘাটে লঞ্চে লাফ দিয়ে উঠতে গিয়ে গঙ্গায় পড়ে যায় সে। ২৪ ঘণ্টা পর ছাত্রের দেহ উদ্ধার হল উত্তরপাড়া ফেরি ঘাটেরই একটি লঞ্চের তলা থেকে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম মলয় প্রামাণিক। উত্তর ২৪ পরগনার আড়িয়াদহের বাসিন্দা মলয় সাত জন বন্ধুর সঙ্গে উত্তরপাড়ার গঙ্গার দিকে বেড়াতে গিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, আড়িয়াদহ কালাচাঁদ হাই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির মোট আট ছাত্র সোমবার স্কুল থেকে পালিয়ে উত্তরপাড়ায় যায়। বাড়ি ফেরার জন্য মলয় ও তার বন্ধুরা লঞ্চে উঠছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে লঞ্চ ছাড়তে দেরি হচ্ছে দেখে মলয় ও তার এক বন্ধু একটি দোকানে গিয়েছিল। ফিরে এসে তারা দেখে লঞ্চ ছেড়ে দিয়েছে। ফেরি ঘাটে লাগানো সিসিটিভিতে দেখা যায় লঞ্চ ছেড়ে দেওয়ার পরও মলয় ও তার বন্ধু দৌড়ে লঞ্চটি ধরতে যায়। কিন্তু জলযানটি অনেকটা চলে গিয়েছিল। এক বন্ধু জেটিতে দাঁড়িয়ে পড়ে। কিন্তু মলয় লঞ্চ ধরতে গিয়ে লাফ দেয় এবং পা পিছলে গঙ্গায় পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে স্কুলছাত্রকে উদ্ধার করতে স্থানীয় এক জন গঙ্গায় ঝাঁপ দেন। কিন্তু ছাত্রের খোঁজ মেলেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। ছাত্রের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। সারারাত খোঁজাখুঁজির পরও ছাত্রটির সন্ধান মেলেনি। মঙ্গলবার লঞ্চের তলায় মলয়ের দেহ আটকে থাকতে দেখেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা।
দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব। তিনি বলেন, ‘‘ফেরিঘাটের কর্মীরা গতকাল (সোমবার) আমায় এই ঘটনাটা জানিয়েছিলেন। পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর তল্লাশি শুরু করে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে লঞ্চের তলায় একটি দেহ আটকে থাকতে দেখা যায়। এর পর দেহ উদ্ধার হয়েছে। অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা।’’ অন্য দিকে, পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ সময় মতো এলেও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা পৌঁছতে দেরি করেছেন। সময়মতো এলে হয়তো প্রাণে বাঁচানো যেত মলয়কে।