Municipality Election

Municipality Election: হাওড়ার সঙ্গে কি পুর ভোট বালিতেও, রয়েছে ধোঁয়াশা

যেমন হাওড়ার পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বললেন, “সরকারি ভাবে কোনও নির্দেশ আসেনি।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২১ ০৭:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

আগামী ডিসেম্বরে কলকাতার সঙ্গে হাওড়া পুরসভারও ভোট করাতে চাইছে রাজ্য। সে ক্ষেত্রে আর কয়েক দিনের মধ্যেই হয়তো ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ২০১৫ সালে হাওড়ার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া বালিও কি এ বার একই সঙ্গে থাকবে, না পুনরায় আলাদা হয়ে বালি পুরসভার ভোট হবে?

Advertisement

এ বিষয়ে স্পষ্ট করে এখনও কিছু বলতে পারছেন না কেউই। যেমন হাওড়ার পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বললেন, “সরকারি ভাবে কোনও নির্দেশ আসেনি। তাই এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।” প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ফেব্রুয়ারিতে বালিকে হাওড়া থেকে আলাদা করার বিষয়ে গেজ়েট নোটিফিকেশন হয়েছিল। যদিও ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের কাজ এখনও হয়নি।

তবে হাওড়া থেকে বালির আলাদা হওয়া এই প্রথম নয়। সূত্রের খবর, ১৮৮৩ সালের ১ এপ্রিল হাওড়া পুরসভা (তখনও কর্পোরেশন হয়নি) থেকে আলাদা হয়ে বালি পুরসভা তৈরি হয়। ১১.৮১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়েই তৈরি হয় বালি বিধানসভা। ২০১৫ সালের মে মাসে বাম পরিচালিত বালি পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়। সেই সময়ে ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র তিনটি ছিল তৃণমূলের দখলে। এর পরে অক্টোবরে ৩৫টি ওয়ার্ডের পুনর্বিন্যাস করে ১৬টি ওয়ার্ডে ভেঙে হাওড়ার সঙ্গে সংযুক্ত করে উপনির্বাচন হয়। তাতে হাওড়ার মোট ওয়ার্ড সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৬।

Advertisement

তখন থেকেই স্বতন্ত্র পুরসভার অস্তিত্ব মুছে গিয়ে হাওড়া পুরসভার উত্তর দিকের শেষ সীমানা হিসাবে চিহ্নিত হয় প্রাচীন জনপদ বালি। ২০১৮ সালে হাওড়া পুরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ায় অন্যান্য ৫০টি ওয়ার্ডের মতো সংযুক্ত ১৬টি ওয়ার্ডও পুর প্রশাসকের অধীনে চলে যায়।

কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই নিজস্ব ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব রক্ষার দাবিতে সরব বালির বাসিন্দাদের একাংশ। প্রথমত, সেখানে বেলুড় মঠের মতো ঐতিহ্যবাহী
স্থান থাকা সত্ত্বেও বালির নিজস্ব পরিচিতি কেন থাকবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ ছাড়া, বালিতে কোনও বরো অফিস না থাকায় যে কোনও কাজে বাসিন্দাদের ছুটতে হয় হাওড়া পুরসভায়। কিন্তু বালি থেকে
সেখানে যাওয়ার সরাসরি কোনও পরিবহণ ব্যবস্থা নেই। আবার হাওড়া পুরসভার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় ট্রেড লাইসেন্স-ফি আচমকা কয়েক গুণ বেড়ে গেলেও সেই মতো পরিষেবা ছিল না বলে অভিযোগ। অন্য দিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল, এ বার হাওড়া পুরসভার ভোটের পরে বালিতে বরো অফিস হবে। তাতে অবশ্য বালির বাসিন্দাদের একাংশ খুশি হয়েছিলেন। তাঁদের মতে, বড় পুরসভায় আর্থিক অনুদান অনেক বেশি। ফলে বরোর মাধ্যমে বালির উন্নয়ন বেশি মাত্রায় হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বাসিন্দাদের দাবি মতো বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, পুনরায় বালি পুরসভা করা হবে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “গত জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভায় বিষয়টি অনুমোদিত হয়ে রয়েছে। তবে কত ওয়ার্ড বা বাকিটা কী হবে, তা নির্দিষ্ট সময়েই জানানো হবে।”

তবে নতুন ভাবে আবার বালি পুরসভা হলে কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। যেমন, ডিসেম্বরে হাওড়ার ভোট হয়ে গেলে বালির নাগরিক পরিষেবার দায়িত্ব কার? আবার কি ৩৫টি ওয়ার্ড হবে না অন্য কিছু— তা-ও স্পষ্ট নয়। ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের কাজ এখনও না হওয়ায় আগামী জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে ওই পুরসভার ভোটের সম্ভাবনা কতটা? হাওড়া পুরসভায় বালি থেকে যে সমস্ত কর্মী চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাঁদের দায়িত্বই বা কার?

সব মিলিয়ে ধোঁয়াশা কাটার অপেক্ষায় বালির মানুষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement