রাজ্য বিজেপিতে বিক্ষুব্ধ অংশের বৈঠক নিয়ে তরজা তুঙ্গে। হুগলিতে দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়েরও দেখা নেই দীর্ঘদিন। এ নিয়ে জেলা বিজেপিতেও কানাঘুষো শুরু হয়েছে। সাংসদের অনুপস্থিতিতে দলের ভাবমূর্তি মানুষের কাছে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলেও মনে করছেন নেতাদের একাংশ। তাঁরা মানছেন, চেষ্টা করেও সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। কবে তাঁর দেখা মিলবে, সে প্রশ্নও উঠেছে।
দলের অপর অংশের নেতারা অবশ্য এ কথা মানছে না। তাঁদের দাবি, সাংসদ না থাকলেও তাঁর কাজ থেমে নেই। সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় কাজ কর্মীরাই করে দিচ্ছেন।
লোকসভা ভোটে হুগলি কেন্দ্রের ভোটাররা লকেটের উপরে আস্থা রেখেছিলেন। তিনি বিপুল ভোটে জিতেছিলেন। মানুষ ভেবেছিলেন, প্রয়োজনে সব সময় সাংসদকে পাশে পাওয়া যাবে। কিন্তু কোথায় তিনি?
বেশ কয়েক মাস ধরেই লকেট এ রাজ্যেই নেই। স্বাভাবিক কারণেই তিনি তাঁর নিজের লোকসভা কেন্দ্রেও দীর্ঘদিন ধরেই অনুপস্থিত। তিনি রয়েছেন উত্তরাখণ্ডে। এতে আখেরে দলই সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হচ্ছে বলে দলেরই একাংশ মনে করছেন। চুঁচুড়ার এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘বিধায়ক বা সাংসদের তাঁর নির্বাচনী এলাকার মানুষের উপর কিছু দায়িত্ব-কর্তব্য থাকেই। প্রত্যেক দলে কর্মীরাই কাজ করেন। তারপরেও সংসদ বা বিধায়কেরা কেন অফিস খুলে বসেন? মানুষের সঙ্গে কেনই বা তাঁরা কথাবার্তা বলেন? কেন সমস্যার কথা জানতে চান?’’ ওই নেতার আরও সংযোজন, ‘‘আমরা সাংসদকে নিয়ে মানুষের দোরে দোরে গিয়েছিলাম ভোটের জন্য। এখন মানুষকে কী জবাব দেব? দল যে কাজেই তাঁকে পাঠাক, এলাকার মানুষের প্রতি তাঁর তো দায়বদ্ধতা থাকবে। দলকেও সেটা তাঁর দিক থেকে জানানো জরুরি। সামনেই পুরভোট চন্দননগরে। চন্দননগর কিন্তু হুগলি লোকসভার মধ্যেই পড়ে।’’
লকেট অবশ্য রবিবার ফোনে দাবি করেন, ‘‘দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমাকে উত্তরাখণ্ডে পাঠিয়েছেন দলেরই কাজে। আমাদের দলের কর্মীরা হুগলিতে মানুষের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করে দিচ্ছেন। আমিও সেখানে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখি। প্রয়োজনে পরামর্শ দিই।’’
সাংসদের অনুপস্থিতিতে মুখ খুলেছেন জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক তথা শাসক দলের জেলা (শ্রীরামপুর-হুগলি) সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘পরিস্থিতি যে জায়গায় গিয়েছে, হুগলির সাংসদের খোঁজে কাগজে বিজ্ঞাপন দিতে হবে এখনই। আমরা রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলো নিয়ে মানুষের কাছে যাচ্ছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কী হবে ওখানে? চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিলের টাকার জন্য মানুষ কোথায় যাবেন? সাংসদই তো নেই। এখন মানুষ বুঝছেন আবেগের বশে ভোট দিয়ে কী ভুল করেছেন!’’
চুঁচুড়ার বিজেপি নেতা গৌতম চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বিরোধীদের সমস্ত আশঙ্কায় জল ঢেলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘শাসকদল এটাকে একটা বিষয় করতে চাইছে। লাভ হবে না। সাংসদ আমাদের মাধ্যমে এলাকার খোঁজখবর নিয়মিত রাখেন। আমাদের কর্মীরা মানুষের প্রয়োজনীয় সব কাজও করে দিচ্ছেন। দলেরই একটা বিশেষ কাজে উনি অন্য রাজ্যে রয়েছেন।
...