জানেন কি?
International Women's Day

মহাত্মা গান্ধীকে চিঠি লিখে স্বাধীনতা সংগ্রামে স্কুলছাত্রী

বাবা ক্ষেত্রমোহন ঘোষ ছিলেন অধ্যাপক, মা অন্নদাসুন্দরীদেবী শিক্ষিকা। দাদা সত্যব্রত তত দিনে তরুণ সঙ্ঘের সদস্য হয়ে স্বাধীনতার লড়াইতে শামিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪ ০৯:৪২
Share:

শান্তিসুধা ঘোষ। ফাইল ছবি

আজ আন্তর্জাতিক নারীদিবস। কিন্তু আমরা ক’জন আর মনে রেখেছি শান্তিসুধাকে! যিনি স্কুলবেলায় স্বদেশি আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এবং স্বাধীনোত্তর সময়ে হুগলি জেলার নারীশিক্ষার অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান, হুগলি উইমেন্স কলেজকে গড়ে তুলেছিলেন তিলে তিলে।

Advertisement

সময়টা ১৯২১। স্বাধীনতা সংগ্রামের আগুন ঝরা সময়। অবিভক্ত বাংলার এক স্কুলছাত্রী চিঠি লিখল মহাত্মা গান্ধীকে। লিখল, দেশের এই অসময়ে সে-ও যুক্ত হতে চায় এক জন সত্যাগ্রহী হিসেবে। উত্তর এল পোস্ট কার্ডে। আনন্দে আত্মহারা শান্তিসুধা ঘোষ নামে ওই ছাত্রী। বাপুজির চিঠি পেয়ে রক্ত যেন আরও ফুটে উঠল! ঝাঁপিয়ে পড়ল স্বদেশি আন্দোলনে।

বাবা ক্ষেত্রমোহন ঘোষ ছিলেন অধ্যাপক, মা অন্নদাসুন্দরীদেবী শিক্ষিকা। দাদা সত্যব্রত তত দিনে তরুণ সঙ্ঘের সদস্য হয়ে স্বাধীনতার লড়াইতে শামিল। ১৯২৮ সালে মাত্র ২১ বছরে শান্তিসুধা কলকাতা কংগ্রেসে যোগ দিলেন। ‘শক্তি বাহিনী’র সদস্য হিসেবে শিখলেন ব্যায়াম, লাঠিখেলা, ছোরা চালানো। হরিজন বিদ্যামন্দিরে অন্ত্যজ মেয়েদের শিক্ষিকা হলেন। বিপ্লবী লীলা নাগের পত্রিকায় লিখতে শুরু করলেন ছোটগল্প। কল্যাণী দাসের ‘ছাত্রী সঙ্ঘে’’ সক্রিয় সদস্য হলেন। ব্যাঙ্ক ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার হলেন। তারপর দীর্ঘ দিন গৃহবন্দি। ১৯৪২ সালে যোগ দিলেন গান্ধীজির ভারত ছাড়ো আন্দোলনে। আবার জেল। আবার গৃহবন্দি থাকা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে পূর্ব পাকিস্তানে থেকে গেলেন।

Advertisement

১৯৫০ সালে এ পার বাংলায় এসে আসানসোল মণিমালা গার্লস কলেজের অধ্যাপক হলেন। তারপরই হুগলিতে সদ্য গড়ে ওঠা হুগলি উইমেন্স কলেজকে সাজিয়ে তোলার জন্য শান্তিসুধাকে আহ্বান জানালেন বিধানচন্দ্র রায় স্বয়ং। সাড়া দিলেন শান্তিসুধা। ১৯৫১ থেকে ১৯৭০— টানা কুড়ি বছর অধ্যক্ষা হিসেবে তিলে তিলে গড়ে তুললেন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে। এই সময়ে আনন্দবাজার, জয়শ্রী, মন্দিরার মতো পত্রিকায় স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন লেখা লিখেছেন।

শান্তিসুধা জন্মেছিলেন ১৯০৭ সালের ২৭ জুন। প্রয়াত হন ১৯৯২ সালের ৭ মে, ৮৫ বছর বয়সে। স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সমাজ গড়ার ইতিহাসে তিনি অবিস্মরণীয়। হুগলিতে মেয়েদের শিক্ষায় তাঁর ভূয়সী অবদান। তবে হুগলি জেলা এই মহিয়সী নারীর স্মৃতি সে ভাবে তুলে ধরল কই!

তথ্য: পার্থ চট্টোপাধ্যায় (আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চাকারী)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement