School Closed

১৬টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত হাওড়ায়

প্রাথমিকস্কুলের এক কিলোমিটারের মধ্যে যদি আর কোনও প্রাথমিক স্কুল নাথাকে তাহলে সেখানে শিশুশিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সেই নীতি মেনে জেলায় ২৫৬ টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:২৯
Share:

বন্ধ হল শিশু শিক্ষাকেন্দ্র। প্রতীকী চিত্র।

দীর্ঘদিন শিক্ষক নেই। তার ফলে পড়ুয়া সংখ্যা কমছিল। সে কারণে হাওড়ার ১৬টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। এই সংক্রান্ত প্রস্তাব রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই দফতরের সবুজ সঙ্কেত পেলেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, নিয়মানুযায়ী কোনও শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে পড়ুয়ার সংখ্যা কম হলেই সেটা বন্ধ করতে হবে। পড়ুয়া পর্যাপ্ত থাকায় এর আগে কখনও কোনও শিশু শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধের প্রয়োজন হয়নি। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার জন্য এই প্রথম একসঙ্গে এতগুলি কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্তনিতে হচ্ছে।

Advertisement

জেলা পরিষদের শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্রীধর মণ্ডল বলেন, ‘‘যে ১৬টি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই সব কেন্দ্রের পড়ুয়াদের কাছের প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হবে। এই সব কেন্দ্রের শিক্ষকদের অন্য শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে বদলি করে দেওয়া হবে।’’

২০০০ সালের শুরুতে পথ চলা শুরু করেছিল শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলি। ঠিক হয়, একটি প্রাথমিকস্কুলের এক কিলোমিটারের মধ্যে যদি আর কোনও প্রাথমিক স্কুল নাথাকে তাহলে সেখানে শিশুশিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সেই নীতি মেনে জেলায় ২৫৬ টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি করা হয়। এখানে পঠন পাঠনের পদ্ধতি প্রাথমিক স্কুলের মতোই। এখানেও মিড ডে মিল দেওয়া হয়। এগুলি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে।

Advertisement

বছর দু’য়েক আগে পর্যন্ত পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এই সব কেন্দ্রে শিক্ষক নিয়োগ করত। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হলেই এই সব শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকতার সুযোগ দেওয়া হয়।প্রতি কেন্দ্রে দুই থেকে চার জন করে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়। বর্তমানে জেলার শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে পড়ে প্রায় ১৪ হাজার পড়ুয়া। কিন্তু এর মধ্যে ১৬টি কেন্দ্রে দেখা যায়, পড়ুয়া কমছে। কোথাও আবার মাত্র দু’জন পড়ুয়াকে নিয়ে চলছিল পঠন-পাঠন।

এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, তৈরি হওয়ার পর থেকে শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। তার মধ্যে আবার অনেকে অবসর নিয়েছেন। ফলে অনেক শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকই নেই। আর তার জেরে এমন পড়ুয়া সঙ্কট। বছর দু’য়েক আগে শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলি পঞ্চায়েতের হাত থেকে চলে যায় শিক্ষা দফতরের হাতে। কিন্তু তারপরও এই সব শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলির তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব শিক্ষা দফতর নেয়নি বলে অভিযোগ। কেন্দ্রগুলিতে কোনও শিক্ষকও নিয়োগ করা হয়নি।

এ বিষয়ে হাওড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতর ওই শিক্ষকদের বেতন দেয়। কিন্তু কেন সেখানে শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে না, সেটা নিয়ে মন্তব্য করতে পারব না।’’ তবে রাজ্য শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, পঞ্চায়েতের থেকে তাদের হাতে শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলি চলে এলেও সেখানে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নানা জটিলতা আছে। সেই কারণেই ফের পঞ্চায়েতের হাতে কেন্দ্রগুলিকে ফিরিয়ে দিতে চায় শিক্ষা দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement