নাগরিক সমাজের প্রতীকী অনশন। শনিবার চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে। ছবি: তাপস ঘোষ।
পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অনশন মঞ্চের সামনে এসে দাঁড়াল বছর পনেরোর এক ছাত্রী। মাইক চেয়ে নিয়ে শোনাল একটি প্রতিবাদী কবিতা। তার পরে বাড়ির পথ ধরল।
বছর তেরোর এক কিশোরী আবার সকাল ১০টা থেকেই অনশন মঞ্চে আন্দোলনকারীদের পাশে হাজির। চুঁচুড়ার কনকশালী ঘটকপাড়ার এই কন্যা চন্দননগরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
আর জি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে চলা চিকিৎসকদের আন্দোলনের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অনশন অবস্থান চলল হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়েও। সেখানেই প্রতিবাদে শামিল হতে দেখা গেল স্কুল পড়ুয়াদেরও। বুকে ‘অনশনকারী’ লেখা কালো ব্যাচ পরে এক ‘ডাক্তারদাদু’র পাশে বসেছিল কনকশালীর মেয়েটি। বছর সত্তরের ওই ‘ডাক্তারদাদু’ সরকারি হাসপাতাল থেকে অবসর নেওয়া শশাঙ্কভূষণ গোস্বামী বললেন, ‘‘এই আন্দোলন মানুষের জন্য, সেটা মানুষ বুঝেছেন। তাই আর জি করের নামে আট থেকে আশি সকলেই পথে নামছেন। আমার নাতনিসম সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীও অনশনে শামিল হতে চাইছে!’’
শনিবার ১২ ঘণ্টার এই কর্মসূচি পালিত হয় চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) এবং নাগরিক উদ্যোগে গড়ে ওঠা ‘তিলোত্তমা বাহিনী’র আয়োজনে। অনশনকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ জন। মঞ্চে এসে বহু পথচলতি মানুষই সমর্থন জানিয়ে গেলেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মঞ্চের সামনে থাকা চেয়ারে ঠায় বসে রইলেন অনেকেই। দিনভর প্রতিবাদী কবিতা, আবৃত্তি তো ছিলই, সঙ্গে চিকিৎসক ও নাগরিকদের বক্তব্য-স্লোগানেও ভরে উঠল হুগলির সদর শহরের প্রাণকেন্দ্র।
নাগরিক সমাজের পক্ষে কোয়েল ভট্টাচার্য জানান, আজ, রবিবার বিকেলে ত্রিবেণী থেকে ঘড়ির মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা হবে। দীর্ঘ ২০ কিমি ওই পথে যোগ দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানানো হয় অনশন মঞ্চ থেকে।