দ্বারকেশ্বর থেকে বালি তোলা হচ্ছে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
নজরদারি সত্ত্বেও দ্বারকেশ্বর নদের পাড় থেকে বালি চুরি অব্যাহত। খানাকুলের ঘোষপুর, ঠাকুরানিচক, কিশোরপুর ১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকায় সেই চুরির মাত্রা বেড়েছে বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। ঘোষপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হায়দার আলির খেদ, ‘‘এমনিতেই নদীবাঁধগুলি দুর্বল। তার উপর পাড় ঘেঁষে বালি তোলার দৌরাত্ম্যে গ্রামগুলো বিপন্ন হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনকে মৌখিক ভাবে বলেছি। কিন্তু লুটপাট বন্ধ হয়নি।”
খানাকুল-১ ব্লক ভূমি আধিকারিক সৌমেন জানা বলেন, “নদনদীর বালি চুরি রুখতে নজরদারি চলছে। গ্রামবাসীদের সচেতন হতে বলছি।”
ওই চার পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনের আলোয় বৈধ অনুমতি ছাড়া ইঞ্জিনভ্যান, নৌকা, সাইকেল এবং গরু বা মোষের গাড়িতে নদীর বালি তুলে বিক্রি হচ্ছে। কোনও কোনও জায়গায় বালির স্তূপ জমিয়ে তা ট্রাক্টরে পাচার হচ্ছে। বালি লুটের এই মোচ্ছব শুধু খানাকুলেই নয়, মহকুমায় দ্বারকেশ্বরের দু’পাড় বরাবর প্রায় ৫৩ কিমি জুড়েই চলছে বলে অভিযোগ।
বালি চুরি যে অব্যাহত, তা মহকুমার পুলিশ ও ভূমি দফতরের তথ্যেও মিলেছে। সংশ্লিষ্ট দুই দফতর থেকে জানা গিয়েছে, গত অক্টোবর মাসে গোঘাট, আরামবাগ এবং খানাকুলের দু’টি ব্লক এলাকা
থেকে বালিবোঝাই অন্তত ৮টি ট্রাক্টর, ১৫টি ইঞ্জিনভ্যান, বেশ কিছু সাইকেল এবং গরুর গাড়ি আটক করে মামলা রুজু হয়েছে।
এসডিপিও (আরামবাগ) অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘‘বালি চুরি রুখতে ধারাবাহিক অভিযান চলছে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” মহকুমা ভূমি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “আমাদের যা লোকবল, তাতে আমরা একা কিছু পারব না। সেচ দফতর, পুলিশ, ব্লক প্রশাসন পঞ্চায়েত-সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে না এলে জেলার বালি শিল্প ক্রমশ বিপন্নই হবে।”