চলছে বালি তোলা। বালি ব্রিজ ও নিবেদিতা সেতুর কাছেই। নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রতি নদী থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা, অবৈধ বালি খাদান চালানো, ট্রাকে বাড়তি পণ্য (ওভারলোডিং) বহন নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ ও প্রশাসনিক স্তরে ওই সব অনিয়মের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে। তার পরেও হুগলি ও হাওড়ার সংযোগস্থলে বালিখাল, উত্তরপাড়া অঞ্চলে প্রকাশ্যে গঙ্গা থেকে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বালি তোলা অব্যাহত বলে অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের। সেই বালি তুলে অবাধে বিক্রি হচ্ছে উত্তরপাড়া, মাখলা ও বালি এলাকার ইটভাটায়।
গত ছ’মাসে উত্তরপাড়া থেকে কোন্নগর এলাকায় স্নান করতে গিয়ে গঙ্গায় তলিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবেশবিদদের বক্তব্য, অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বালি তোলার কারণে গঙ্গায় ঘূর্ণি তৈরি হচ্ছে। তার ফলে নদীর চোরা স্রোতের কারণে স্নানে নেমে তলিয়ে যাচ্ছেন মানুষ। বালি থেকে কল্যাণী ভাঙনপ্রবণ। বেআইনি ভাবে এবং অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বালি তোলায় এই বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাঙনের সম্ভাবনাও বাড়ছে।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি অবশ্য ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে নির্দিষ্ট খবর আছে। আমরা এর আগে ব্যবস্থা নিয়েছি। ফের নেব।’’ উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘গঙ্গা থেকে
বেআইনি ভাবে বালি তোলা জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করা দরকার। পোর্ট ট্রাস্টের নিয়মিত নজরদারি চালানো দরকার। এর আগে অভিযোগ পেয়ে আমরা জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, পোর্ট ট্রাস্টকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলাম। তখন ওই কাজ সাময়িক বন্ধ হয়েছিল। ফের জানাব।’’
গঙ্গাপারে বহু মানুষের বাস। গঙ্গার পাড় ভাঙলে মানুষের জীবন ও জীবিকা প্রশ্নের মুখে পড়ছে। পরিবেশকর্মীরা চাইছেন, প্রশাসন শক্ত হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করুক। বিশিষ্ট পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গঙ্গা থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা এবং গঙ্গাপারের বেআইনি নির্মাণ প্রশাসনকে রুখতে হবে। বালিখাল লাগোয়া অঞ্চলে বালি তোলা না রুখলে কাছেই বালিব্রিজ এবং নিবেদিতা সেতু দুর্বল হয়ে পড়বে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এমনিতেই গঙ্গার পশ্চিমপার ভাঙনপ্রব। উত্তরপাড়া থেকে চন্দননগরের বিভিন্ন জায়গায় গঙ্গার পারে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। অবিলম্বে ওই বেআইনি কাজ বন্ধ করা জরুরি।’’